বিশেষ সংবাদ:
অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডসহ রাশিয়াজুড়ে গতকাল শুক্রবার থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আগামী রবিবার কালিনগ্রাদে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই পঞ্চম মেয়াদে দেশটির নেতা নির্বাচিত হবেন বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও অনেকে এবারের নির্বাচনকে পুতিনের ইউক্রেন হামলার বিষয়ে রুশ জনমত যাচাইয়ের একটি উপায় হিসেবেও দেখছে।
টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য ২০২১ সালেই আইন পরিবর্তন করেছিলেন পুতিন। গত বছর ডিসেম্বরে বড় ধরনের এক সামরিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুতিন রুশ জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াবেন। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন পুতিন। নির্বাচনে সব ভোটারকেই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে পুতিনের জয় কার্যত নিশ্চিত হওয়ায় তিনি এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই নেতার রেকর্ড ভাঙার সময়ের অপেক্ষায়। টানা ২৪ বছর ক্রেমলিনে ক্ষমতায় ছিলেন জোসেফ স্তালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভ। এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে বসতে পারলে নতুন দৃষ্টান্ত গড়বেন পুতিন।
রাশিয়ার কামচাটকায় স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
রবিবার ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করা হবে। আগামী মে মাসে বিজয়ী নেতার ক্ষমতায় অভিষেক হবে। রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানান, ভোটগ্রহণের প্রথম দিন ভোটকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে অন্তত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এরা পুতিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন কি না তা পরিষ্কার করেননি কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে পাঁচজন চার অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্সে রং ঢেলে দিয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত রাশিয়ার ২৬ লাখ ভোটার তাদের আগাম ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত ঘোষণা করা দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক, খারসন অঞ্চলেও প্রায় ১৭ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন বলে কমিশন জানায়। এবারের নির্বাচনে পুতিনের সঙ্গে তিনজনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে নিকোলাই খারিতোনোভ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। ২০০৪ সালের নির্বাচনে তিনি পুতিনের বিরুদ্ধে ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় প্রার্থী হলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির লিওনিদ স্লুতস্কি। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়েছিলেন। আরেক প্রার্থী নিউ পিপলস পার্টির ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভও ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সমর্থক।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সেন্ট পিটার্সবার্গে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে পেট্রলবোমা ছুড়ে মেরেছেন এক নারী। শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দেশটির নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তা ম্যাক্সিম মেকসিন টেলিগ্রাম অ্যাপে জানান, সন্দেহভাজন ওই নারীর বয়স ২০ বছর। এর বাইরে রাশিয়া অধিকৃত দক্ষিণ ইউক্রেনের একটি ভোটকেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে সেখানেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
Leave a Reply