1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
একনেকে ১০ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় দুই হাজার কোটি টাকা সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ও কন্যার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন চাঁদপুরে জাহাজ থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ: টিউলিপের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের দুই ম্যাচের সূচি বিশ্বে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী-মসজিদের ইমাম একসঙ্গে পালিয়েছেন: দুদক চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে বড় জমায়েত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বদলে গেলো যমুনা নদীতে নবনির্মিত রেলসেতুর নাম

ঋণ করে রমজান মাসের বাজার করছেন দেশের ৪ কোটি মানুষ

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
  • ১৩১ বার ভিউ

বিশেষ সংবাদ:
দেশের এক-চতুর্থাংশ পরিবার খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে ঋণ করে। শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষই এ জন্য বেশি ঋণ করছে। শহর ও গ্রামের মানুষ এ ঋণের বড় অংশই নিচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে চড়া সুদে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩’–এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মাত্রা ও তার প্রভাব এবং খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলায় মানুষের ঋণ গ্রহণ, অর্থ ব্যয়সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে এ জরিপে। গত বছরের ১৫ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত দেশের মোট ২৯ হাজার ৭৬০ পরিবারের ওপর জরিপ করে এ তথ্য সংগ্রহ করে বিবিএস।

বাসাভাড়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াতসহ প্রতিটি খাতেই জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ কমে গেছে।

সাধারণত অর্থ বা অন্যান্য সম্পদের অভাবের কারণে খাদ্য গ্রহণ বা খাওয়ার ধরনে বিঘ্ন হলে তাকে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিবিএস বলছে, খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিষয়। আর্থসামাজিক বৈষম্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়টি কখনো জীবন হুমকিরও কারণ হতে পারে। বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ পরিবার তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আর ২২ শতাংশ পরিবার মাঝারি বা তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

এদিকে দুই বছর ধরে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়তি। তাতে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি তেল, সাবান, শ্যাম্পুর মতো নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া বাসাভাড়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াতসহ প্রতিটি খাতেই জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ কমে গেছে।

আমাদের বিভিন্ন জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে বিবিএসের তথ্যের চেয়েও বেশিসংখ্যক পরিবার এখন খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা এসব পরিবারের পক্ষে ঋণ করে টিকে থাকাও ক্রমেই দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাই বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো জরুরি।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান
বিবিএসের হিসাবেই, দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। বাজারে পণ্যমূল্য যতটা বেড়েছে, সেই তুলনায় মানুষের আয় বাড়েনি। এ কারণে জীবনযাত্রার খরচ সামাল দিতে ঋণ করছে নিম্ন আয়ের মানুষ। খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার জরিপেও ঋণ গ্রহণের এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট পরিবার বা খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৬ শতাংশ পরিবার মৌলিক চাহিদা পূরণে ঋণ করছে। এসব পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে গ্রামের মানুষ। বিবিএসের হিসাবে, মৌলিক চাহিদা পূরণে ঋণগ্রস্ত পরিবারের প্রায় ২৮ শতাংশই গ্রামের। শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় এ হার যথাক্রমে ২৪ ও ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ ৮ বছরে দ্বিগুণ, মাথাপিছু ৬৩ হাজার টাকা
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং বা সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে বিবিএসের তথ্যের চেয়েও বেশিসংখ্যক পরিবার এখন খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা এসব পরিবারের পক্ষে ঋণ করে টিকে থাকাও ক্রমেই দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাই বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো জরুরি।’

এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয় এনজিও থেকে। গ্রাম, শহর ও সিটি করপোরেশন মিলিয়ে ঋণগ্রস্ত পরিবারগুলো ৬৮ শতাংশের বেশি ঋণ নেয় এনজিও থেকে চড়া সুদে। এর বাইরে আত্মীয়স্বজন, ব্যাংক, মহাজন বা অন্যান্য উৎস থেকেও ঋণ করে পরিবারগুলো।
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, মৌলিক চাহিদা পূরণে ঋণগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার বছরে গড়ে ৯০ হাজার টাকা ঋণ করে। এর মধ্যে পরিমাণের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেয় আবাসনের সংকট মোকাবিলায়, এ জন্য পরিবারগুলোর বছরে গড়ে ঋণ নেয় ১ লাখ ৯ হাজার ২২২ টাকা। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ নেয় বিয়ের জন্য, এ জন্য বছরে পরিবারপ্রতি গড় ঋণ ৯৯ হাজার ৭১৪ টাকা। এ ছাড়া খাদ্যের প্রয়োজন মেটাতে পরিবারপ্রতি গড় ঋণ বছরে প্রায় ৪৯ হাজার টাকা।

এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয় এনজিও থেকে। গ্রাম, শহর ও সিটি করপোরেশন মিলিয়ে ঋণগ্রস্ত পরিবারগুলো ৬৮ শতাংশের বেশি ঋণ নেয় এনজিও থেকে চড়া সুদে। এর বাইরে আত্মীয়স্বজন, ব্যাংক, মহাজন বা অন্যান্য উৎস থেকেও ঋণ করে পরিবারগুল

বিবিএস বলছে, মাঝারি পর্যায়ে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় থাকা পরিবার বলতে বোঝানো হয়েছে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার গ্রহণে যারা অক্ষম তাদের। আর তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় থাকা পরিবার বলতে বোঝানো হয়েছে খাদ্য কমানোর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে। বিবিএসের হিসাবে, জরিপকালে দেশে প্রায় ২২ শতাংশ পরিবার মাঝারি পর্যায়ের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ছিল। আর শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ পরিবার তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ছিল।

খাদ্যনিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে এবারই প্রথম কোনো জরিপ করেছে বিবিএস। সংস্থাটি বলেছে, দেশে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বিষয়ে সরকারি পরিসংখ্যানের ঘাটতি রয়েছে; এ জন্য জরিপটি করা হয়েছে।

যদিও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংখ্যা নিয়ে বৈশ্বিক বিভিন্ন সংস্থার জরিপ রয়েছে। যেমন ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টিসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ছিল ৫ কোটি ২৭ লাখ মানুষ। আবার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ২০২৩ সালের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, গত বছর দেশের ৪ কোটি মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে।

২০২০ সালে করোনার সময় থেকে দেশে খাদ্যসহ মৌলিক চাহিদার বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে শুরু করে। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৭১ শতাংশ পরিবার খাদ্যের বাড়তি দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ কারণে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের অনেক মানুষকে বাধ্য হয়ে ঋণ করতে হচ্ছে।

২০২২ সালের মার্চে প্রকাশিত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে আর্থিক সংকটের মধ্যে টিকে থাকতে ৩৪ শতাংশ মানুষ ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকার এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যপণ্য কেনাকাটায়, এক-চতুর্থাংশ আগের ঋণ পরিশোধে এবং কিছু অংশ ওষুধ কেনা ও চিকিৎসার খরচ বাবদ ব্যয় করা হয়েছে।

মৌলিক চাহিদা মেটাতে মানুষের ঋণ করার এ প্রবণতা যে এখনো কমেনি, তা উঠে এসেছে বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপের (২০২২) তথ্যেও। সংস্থাটির সেই জরিপের তথ্য বলছে, দেশে পরিবারপ্রতি ধার বা ঋণ করা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দেশের এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ধার করে জীবনযাপন করছে।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় সাফল্য সত্ত্বেও বড় একটি জনগোষ্ঠী খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এটি প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com