বিশেষ সংবাদ:
ঈদে যানবাহনের চাপকে সামনে রেখে বাস রাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের রোডস অ্যান্ড হাইওয়েস ডিপার্টমেন্ট (আরএইচডি) অংশের আওতায় নির্মিত ৭টি ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য আজ (২৪ মার্চ) খুলে দেওয়া হচ্ছে।
রোববার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই ৭ ফ্লাইওভারের উদ্ধোধন করবেন।
ঈদে গাজীপুরে যানজট কমাতে ফাইওভার খুলে দেওয়ার কথা মন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমুলক সভায় তিনি বলেন, “ঈদে দুই জায়গা ঠিক করলে সব ঠিক; এর একটি গাজীপুর দিক থেকে ঢাকা অংশের প্রবেশ পথ। এইজন্য আমরা ঈদের আগেই এর আরএইচডি অংশের আওতায় নির্মিত ৭টি ফ্লাইওভার চলাচলের জন্য খুলে দেব। আশা করি, এবার এখানে তেমন যানজট হবে না।”
আজ ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হলেও, এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হতে জুন পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান মন্ত্রী।
রাজধানীর সেতুভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, “এ বছরের জুনের মধ্যে বিআরটি প্রকল্প শেষ হবে। এখনই নিচের অংশে আর ভোগান্তি নেই। মাত্র ৪০ মিনিটে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে।”
এরআগে, ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর বিআরটি প্রকল্পের একাংশ– গাজীপুরের টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস থেকে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভারের ঢাকামুখী ২ লেন– যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এই লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
প্রকল্পের ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (আরএইচডি) কাজ ১৬ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৭টি ফ্লাইওভার রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতায় রয়েছে ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ।
সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরা হাউজ বিল্ডিং হতে টঙ্গী চেরাগ আলী মার্কেট পর্যন্ত এলাকার সড়কের কাজ করছে। বাকিটা হচ্ছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে।
এছাড়া, সড়কের প্রধান করিডোরের সঙ্গে সংযোগের জন্য বিভিন্ন অংশে ১১৩টি সংযোগ সড়ক, ২৫টি বিআরটি স্টেশন, ঢাকা বিমানবন্দর ও গাজীপুরের শিববাড়ি এলাকায় দুটি বাস টার্মিনাল থাকছে প্রকল্পে।
বাস স্টপেজে প্রবেশ ও বের হওয়া এবং পথচারী পারাপারের জন্য থাকছে ৩০টি আন্ডারপাস, নতুন সড়কের দুপাশে উচ্চ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪১ কিলোমিটার ড্রেন ও ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাতও থাকছে এ প্রকল্পের অধীনে।
২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।
Leave a Reply