বিশেষ সংবাদ:
সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ জন নিহত হবার পর ইরানের জন্য জন্য একটি কঠিন সময় যাচ্ছে। একদিকে এই হামলার জবাব দিতে চাইছে দেশটি। অন্যদিকে ইরান এমন কোন কাজ করতে চায় না যার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ইসরায়েল এবং আমেরিকার কর্মকর্তারা মনে করেন, ইরান পাল্টা আঘাত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমেরিকার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ইরান ড্রোন এবং ক্রুস মিসাইল হামলার পরিকল্পনা করছে।
তবে কখন এবং কোন জায়গায় এই আঘাত করা হবে সেটি নিশ্চিত নন আমেরিকার কর্মকর্তারা। এই হামলা এখন থেকে শুরু করে রমজান মাসের শেষ সপ্তাহে যে কোন সময় হতে পারে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা।
ড্রোন ও মিসাইল হামলা ইরাক ও সিরিয়ার মাটি থেকে নাকি ইরানের ভেতর থেকে পরিচালনা করা হবে সেটিও এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি মার্কিন গোয়েন্দারা।
এদিকে ইসরায়েলও বলেছে যে ইরান যদি পাল্টা আঘাত করে তাহলে তারা আবারো হামলা চালাবে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের সংকেত বেজে উঠতে পারে।
সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় বিপ্লবী গার্ডের সাতজন সদস্য নিহত হয়। তাদের শেষকৃত্যে তেহরানে যোগ দেন অনেকে।
ইরানের শক্তি আছে?
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোন কড়া সামরিক জবাব দিতে গেলে সেটি যুদ্ধকে ইরানের দোরগোড়ায় টেনে আনবে। কারণ, ইরানের বিষয়ে ইসরায়েলও ছেড়ে কথা বলবে না।
অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলার যথাযথ জবাব দিতে না পারলে ইরানের সামরিক সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। ফলে ভবিষ্যতে ইসরায়েল ইরানকে আরো দুর্বল ভাববে এবং তাদের ওপর চেপে বসবে।
ইরানকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা দুর্বল নয়। যে কোন হামলার জবাব দেবার ক্ষমতা তাদের রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের কোন যুদ্ধের সূত্রপাত না করে ইরান কিভাবে ইসরায়েলকে জবাব দিতে পারে সেটি নিয়ে এক ধরনের দোদ্যুল্যমানতা তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে ইসরায়েলকে পাল্টা আঘাত করার মতো সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সামর্থ্য ইরানের রয়েছে কী না?
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ও লেখক আলী সাদরাজদেহ বিবিসিকে বলেন, ইসরায়েলের সাথে সংঘাতে জড়ানোর মতো সামর্থ্য ইরানের নেই।
“কিন্তু দেশের ভেতরে জনগণকে দেখানোর জন্য হলেও ইরানকে একটি জবাব দিতে হবে। এছাড়া নিজেদের মিত্রদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা টিকিয়ে রাখার জন্যও ইরানকে একটি পদক্ষেপ নিতে হবে,” বলেন মি. সাদরাজদেহ।
ইসরায়েলের কাছে ইরান যতই অপদস্থ হোক না কেন, এর কড়া জবাব দেবার সম্ভাবনা খুবই কম। এর পরিবর্তে ইরানকে ‘কৌশলগত কারণে ধৈর্য’ ধরতে হবে।
কারণ, ইরানের এখন অগ্রাধিকার হচ্ছে পারমাণবিক বোমা তৈরি করা। কিছু ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়ে ১০০ জন ইসরায়েলিকে হত্যা করার চেয়ে পারমাণবিক বোমা তৈরির পথে এগিয়ে যাওয়া যুক্তিযুক্ত। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে শুধু ইসরায়েল নয়, আমেরিকার হামলা ঠেকাতেও সক্ষম হবে ইরান।
Leave a Reply