বিশেষ সংবাদ:
বগুড়া শাজাহানপুর থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নুরুজ্জামান নুরুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দফতর সম্পাদক মশিউর রহমান মামুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় এক কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতারের প্রতিবাদে শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান দলবল নিয়ে থানায় গিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং পুলিশি কাজে বাধা দেন। যা সম্পূর্ণ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান সাহীন ও সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত দলীয় পদ-পদবি থেকে নুরুজ্জামানকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান সাহীন বলেন, আমরা নুরুজ্জামান নুরুকে শাজাহানপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আরো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবগত করা হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, জমি দখল, সরকারি কাজে বাধা এবং মাদক আইনে অন্তত ৮টি মামলা রয়েছে। এর আগে সরকারি টেন্ডার চুরির ঘটনায় মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বরখাস্ত হয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযানে মদ্যপ অবস্থায় মাদক, ২টি বার্মিজ চাকুসহ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিঠুনের নামে হত্যা ও মাদকসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান।
এ ঘটনার পর রাত ১০টার দিকে মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান ওরফে নুরু অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে থানায় ঢুকে মিঠুন মিয়াকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় থানার ওসি শহিদুল ইসলামকে ধাক্কা দেন এবং অপর পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করে পালিয়ে যান। মারধরে অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ আরো জানায়, পরে নুরুজ্জামান আরো লোকজন নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে ফের আক্রমণ করতে মাঝিড়ায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় জেলা পুলিশ, র্যাব ও ডিবির সদস্যরা নুরুসহ সাদ্দাম হোসেন রবিন, রমজান আলী, সাইদুর রহমান খোকন, বোরহান উদ্দিন, সেরাজুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মো. মিতুল এবং ওয়াবুজ্জামান রাতুলকে গ্রেফতার করে। এরপর অভিযান পরিচালনা করে নুরুর বাড়ি থেকে ৭ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল এবং নুরুর ম্যানেজার নাজমুলের বাড়ি থেকে ৮ রাউন্ড গুলিসহ আরো একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ৩৬টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, নুরুজ্জামানসহ গ্রেফতারকৃত ৯ আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। তাদের সবাইকে রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
Leave a Reply