বিশেষ সংবাদ:
জনগণ প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (০৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
বর্জনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানবজাতি স্বৈরাচারের দুঃশাসনে বেশি দিন লুকিয়ে থাকতে ও নীরব থাকতে পারে না। অধিকার আদায়ে বুক বেঁধে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একনায়কতন্ত্রের অপরাধগুলো ধিক্কার জানায়। দমনমূলক শক্তি ভোটারদের নিগ্রহ করছে, উগ্র রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। নিকৃষ্ট লুণ্ঠনের মাধ্যমে উপজেলা প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে লুটেরা ও দস্যু দলের আখড়া।
রিজভী বলেন, এমনও দেখা যাচ্ছে ভোটারবিহীন নির্বাচনে দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে একশো বিঘার বেশি জমির মালিক হয়েছে। অথচ আইন অনুযায়ী ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকতে পারে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি যতই উচ্চারিত হয় ততই সরকারের কাছে জেল-জুলুমের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। যারা দ্বিতীয়বার প্রার্থী হয়েছেন তাদের আগের হলফনামায় ঘোষিত আয়ের চেয়ে কয়েকজনের আয় বেড়েছে ৩ হাজার শতাংশের বেশি। কারও আয় বেড়েছে ১ হাজার শতাংশের বেশি। গাইবান্ধায় একজন প্রার্থীর আয় বেড়েছে ৪ হাজার শতাংশ। স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদও বেড়েছে কোথাও কোথাও ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার শতাংশ।
রিজভী আরও বলেন, যে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই, সেই দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে ভোটারবিহীন নির্বাচনে কেউ চেয়ারম্যান ঘোষিত হলে হাতিশালে হাতি ও ঘোড়াশালে ঘোড়ার কোনো অভাব হয় না। আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের স্বজন ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচিত হতে পারে না। ভোটারদের ভোটের প্রয়োজন হয় না। ফলাফল নির্ধারিত থাকে, সেটিই ঘোষিত হয়। সুতরাং আওয়ামী প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের ভোটারগণ সর্বান্তকরণে উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) আসরের নামাজের সময় মসজিদে যাওয়ার পথে সিদ্ধেশ্বরী মাঠ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মহিদুল হাসান হিরুকে সাদা পোশাকধারীরা মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। যে গাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার নম্বর- ঢাকা মেট্রো-চ, ৫২-১৪৫০। নিজ কক্ষে ৩ ঘণ্টা আটকিয়ে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দুই নেতা নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খানকে মারধর ও চরম নির্যাতন করা হয়। পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। অবৈধ সরকারের অনাচারমূলক স্বার্থসিদ্ধির সুসজ্জিত সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে ছাত্রলীগকে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে এরা হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে গণতন্ত্রমনা ছাত্রদের ওপর। এরা হামলা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের উপরও। জীবন-জীবিকা সব কেড়ে নিঃস্ব, রিক্ত ও বিপর্যস্ত করছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ দেশের সবচেয়ে খতরনাক বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply