বিশেষ সংবাদ:
বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা হারাবে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল অব অলি আহমেদ, বীর বিক্রম। তিনি আরও বলেন সরকার নামে বেনামে জনগনের টাকা আত্মসাৎ করছে । শনিবার (১৮ মে) মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অলি আহমেদ বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে দেশে আইনের শাসন নেই বললেই চলে। কারণ সরকার সুপরিকল্পিতভাবে আইন আদালত ধ্বংস করে দিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ করছে এবং দলীয় লোকদের মাধ্যমে পরিচালনা করছে। আইনের প্রয়োগ হচ্ছে অন্যায়ভাবে, শুধু বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের হয়রানি ও মিথ্যা এবং সাজানো মামলার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য। অথচ দেশকে সঠিক এবং উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য, সমাজে শান্তি নিশ্চিত করার জন্য, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য, সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনের শাসনের গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইচ্ছে অনুযায়ী নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে এবং সর্বসাধারণের উপর জোর জুলুম নির্যাতন ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। সমাজে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে দেশে কখনও শান্তি ফিরে আসবে না, মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। যে কোন সময় ব্যাপক ধ্স নামতে পারে। অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণে কৃষকের মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নদী নালা শুকিয়ে গেছে, পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে বিভিন্ন ধরণের রোগ বিস্তার লাভ করছে। বর্তমান অবস্থায় দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জায়গা দেয়ার মত অবস্থা নেই।
জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিবীদ বলেন, দেশে লুটতরাজের কারণে প্রবাসীরা রেমিটেন্সের টাকা পাঠানো থেকে বিরত রয়েছে। অন্যদিকে ২৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯.৬ বিলিয়ন ডলার। আসল দুরে থাক, সুদের টাকা পরিশোধ করার অবস্থাও বর্তমান সরকারের নেই। পেট্রোলিয়াম জাতীয় দ্রব্যের খাতে বকেয়া পড়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার। বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তারা ডলার সংকটের কারণে তাদের লাভের টাকা নিজ দেশে ফেরত নিতে পারছে না। এই মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিতে ১১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা বিদেশি ঋণ পরিশোধ করার চাপ রয়েছে। এই ঋণ সুদসহ নির্দিষ্ট সময় শেষে পরিশোধ করতে হবে। যা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় সম্ভব নয়। অন্যদিকে এর প্রভাব বিভিন্ন প্রকল্পের উপরও পড়েছে। যার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং বাজেট বাস্তবায়ন ৪০ শতাশের নিচে।
বর্তমান সরকার অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে। কিছু কিছু প্রকল্প এখনও চলমান আছে এবং কয়েকটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পের ব্যয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় ৩-৫ গুণ বেশি। অনেকের ধারণা জনগণের এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। ডলার সংকট এবং অর্থনৈতিক দুরাবস্থার জন্য এই মেগা প্রকল্পগুলো অনেকাংশে দায়ী।
Leave a Reply