বিশেষ সংবাদ:
শ্বাসরোধ করে খুন করে চপার দিয়ে দেহ টুকরো। শরীর থেকে ছাড়ানো হয়, চামড়া। আলাদা করা হয় হাড় মাংস। পরে দেহাংশ ফেলা হয় পোলেরহাট আর ভাঙরে। সেসব দেহাংশের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনে চাঞ্চল্যকর এখন পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির হাতে।
আনোয়ারুল আজীমকে খুন করার পরে যে ‘কসাই’ তার দেহ টুকরো করেছিলো বলে অভিযোগ, তাকেও গ্রেপ্তার করেছে লালবাজার সিআইডি। শুক্রবার বারাসত আদালতে তোলা হয়েছে তাকে। নেয়া হয়েছে ১২ দিনের রিমান্ডে। এর আগে বৃহস্পতিবার কসাই জিহাদকে আটক করে একটানা জেরা করা হয়।
এদিন রাতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার জিহাদকে নিয়ে কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙ্গড়-পোলেরহাট এলাকার ব্যাপক তল্লাশি করে সিআইডি। মোট ছয়টি গাড়িতে পুলিশ ফোর্স নিয়ে তল্লাশি অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারাও। তবে মরদেহের কোনো অংশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে ডাকা হয়েছিলো এমপি আনারকে। সেখানেই তাঁকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় এই কসাই জিহাদের সাহায্যে। প্রমাণ লোপাট করতে কুচি কুচি করে দেহ কেটে তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, প্রমাণ লোপাটের জন্য শরীর থেকে তুলে ফেলা হয়েছিল চামড়াও। হাড় আলাদা করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আখতারুজ্জামানের শাহীনের নির্দেশে সে সহ চারজন মিলে এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এরপর তারপর ওই ফ্ল্যাটের মধ্যেই পুরো শরীর থেকে সব মাংস আলাদা করে জিহাদ কিমা করে, তারপর তা কিছু পলিথিনে রেখে দেয়। হাড়গুলোকেও ছোট ছোট টুকরো করে প্যাকেট করা হয়। পরে সেসব প্যাকেট ফ্ল্যাট থেকে বের করে বিভিন্ন গাড়ি ব্যবহার করে কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় ফেলে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার ভোরে সিআইডি ও পুলিশ আটক করে জিহাদসহ ট্যাক্সি ক্যাব চালককে। তারা জানায়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পোলেরহাট থানার কৃষ্ণমাটি এলাকার একটি খালে মরদেহের কিছু অংশ ফেলা হয়েছে। মরদেহ কিমা এবং হাড়গুলো ছোট ছোট টুকরো করায় সব অংশ উদ্ধার একেবারেই অসম্ভব।
কলকাতার পুলিশ জানিয়েছে, এমপি আনার খুনে গ্রেফতার সিয়ামই কসাই জিহাদ। তার প্রকৃত নাম জিহাদ হাওলাদার। তিনি পেশায় কসাই। বিভ্রান্তিতে ফেলার জন্য নিজের নাম সিয়াম বলা শুরু করে জিহাদ। ২৪ বছরের জিহাদের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায়। কয়েক বছর ধরে মুম্বাইতে থাকতো জিহাদ।
দেহাংশের খোঁজে সেই খালে আবার অভিযান, সঙ্গে কসাই জিহাদদেহাংশের খোঁজে সেই খালে আবার অভিযান, সঙ্গে কসাই জিহাদ
দুই মাস আগে কসাই জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন আখতারুজ্জামান শাহীন । এমপি আনার হত্যার ঘটনাস্থল সঞ্জীবা গার্ডেনের আলোচিত ওই ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এই শাহীনই এমপি আনারের কিলিং মিশিনের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জিহাত মুম্বাই চলে যায়। সেখানে অবৈধভাবে বসবাস করে। মুম্বাইয়ে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করতো জিহাদ। শাহীন কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিহাদ জানিয়েছে, শাহীনের নির্দেশেই এমপি আনারকে খুন করা হয়।
Leave a Reply