সরেজমিন প্রতিবেদন:
ঢাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে বিএনপি। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেল তিনটায় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
সহস্রাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বিকেল তিনটা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের শুরুতে বক্তব্য রাখেন সদ্য বিলুপ্ত ঢাকা উত্তর মহানগর কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক। এরপরে বক্তব্য রাখেন সদ্যবিলুক্ত ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জনাব মুন্সি রফিকুল আলম মজনু। এরপরে একে একে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপিকা সেলিনা রহমান। বিএনপির চেয়ারপারসনে ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হাসান। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
সভাপতির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র একসাথে যায় না। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, আওয়ামী লীগ সে গণতন্ত্র এদেশে প্রতিষ্ঠা করেছে। এ গণতন্ত্র কোন গণতন্ত্র নয়। এটি হলো বকশালের নামান্তর। এ সরকার বিনা ভোটে নির্বাচিত। তাই সকলেই এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন কিছুদিন আগে আমি আফ্রিকান আমেরিকান একটি মিউজিয়াম এ গিয়েছিলাম। সেখানে একটি স্লোগানলেখা রয়েছে। সেটি হল When injustice becomes law, Resistance then becomes a duty.এর মানে হলো যেখানে অন্যায় আইনে পরিণত হয়, সেখানে প্রতিরোধ কর্তব্য হিসেবে পরিগণিত হয়। তিনি বলেন বর্তমান বাংলাদেশে যা হচ্ছে সেটা অবশ্যই অন্যায়। এখানে আইন নাই, মানবাধিকার নাই, আইনের শাসন নাই জনগণের ভোট দানের অধিকার নাই, এখানে সর্বক্ষেত্রে অন্যায় বিরাজমান তাই এখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে । জনগণের প্রতিরোধের মাধ্যমেই বর্তমান অন্যায়ের প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটা সেটা হল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি। খালেদা জিয়া ১৯৭১ সাল থেকেই জনগণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি আমাদের সৈনিকদের মনোবল বৃদ্ধিতে কাজ করেছেন, অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। এজন্য আমি তাকে সব সময় বলি তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তিনি দেশ, দল ও জনগণের দায়িত্ব নিয়েছেন। নয় বছর স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। খালেদা জিয়া এবং গণতন্ত্র কে আলাদা করার কোন সুযোগ নেই। ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারের পূর্বে তিনি বলে গেছেন, আমাদেরে গণতন্ত্রের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে তিনি কারাবন্দি। আমাদেরকে আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের এই আন্দোলন পর্যাপ্ত নয়। আমাদেরকে আরও তীব্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন। যারা ভিরু এবং কাপুরুষ তারা আগেই বিতাড়িত হবে।ইংরেজি প্রবাদ আছে Cowards die many time before their death.আর যারা সাহসী তারা অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তাই আসুন বন্ধুগণ, আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এদেরকে পরাজিত করি।
Leave a Reply