বিশেষ সংবাদ:
ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে ডানপন্থীরা বিশাল জয় পেয়েছেন। এতে করে দেশটির রাজনীতিতে ডানপন্থী রাজনীতির আধিপত্য বিস্তার লাভ করলো এবং তারা ক্ষমতার লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন। মেরি লা পেনের অভিবাসন বিরোধী ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) দলের সমর্থকরা উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন। রোববার দেশটির আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে নিজেদের জয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে গিয়ে পেন বলেছেন, ম্যাক্রনের ব্লক নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, পেনের দল আরএন ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ গতকালের ভোটে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ম্যাক্রনের জোট পেয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ ভোট। এছাড়া দেশটির বামপন্থী জোটগুলোর প্রাপ্ত ভোট ২৮ দশমিক ১ শতাংশ।
মাত্র ২৮ বছর বয়সী আরএন পার্টির নেতা জর্ডান বারদেলা বলেছেন, আমি সকল ফরাসি জনগণের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা রাখি, যদি তারা আমাকে তাদের ভোট দেয়।
ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে এর আগে কখনোই চরম ডানপন্থীরা প্রথম রাউন্ডে জয়লাভ করতে পারেনি। প্রবীণ ভাষ্যকার অ্যালাইন ডুহামেল ডানপন্থীদের উত্থানকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও এর আগে থেকেই বিভিন্ন জরিপে বলা হচ্ছিল যে এবারের নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী দলগুলোর রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে এবং পার্লামেন্টে তারা জয় পেতে।
বিশেষজ্ঞদের আগাম বার্তাই এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তারা বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন আগাম নির্বাচনের যে কৌশল নিয়েছেন তা উল্টো বুমেরাং হতে পারে। এছাড়া তিনি ক্ষমতাও হারাতে পারেন বলে মন্তব্য করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টে নির্বাচনে ব্যাপক জয় পায় কট্টর ডানপন্থীরা। তাতে পিছিয়ে পড়ে ম্যাক্রনের দল। তখন তিনি আকস্মিকভাবে পার্লামেন্টে নির্বাচন ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই জনমত জরিপে এগিয়ে ছিল মেরি লা পেন এবং জর্ডান বারডেলার ন্যাশনাল র্যালি।
মেরি লা পেন ও জর্ডান বারডেলা ৫৭৭ আসনের মধ্যে জাতীয় পরিষদে ২৮৯টি আসনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই সরকার গঠন করতে পারবেন। আগামী রোববার দেশটিতে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের পর বুঝা যাবে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করতে পারবে কী না। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়া ফ্রান্সে সরকার গঠন করা কঠিন। এক্ষেত্রে আরএন এবার নির্বাচনী প্রচারণায় যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলোও বাস্তবায়নে তাদের কার্যকারীতা অনুমোদিত হবেনা। দলটি এবার অভিবাসন ইস্যু, কর হ্রাস এবং আইনশৃঙ্খলার জন্য তার পরিকল্পনাগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে কট্টর ডানপন্থীদের জয়ে কৌশল হিসেবে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ম্যাক্রন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, আগাম নির্বাচনই কট্টর ডানপন্থীদের ঠেকানোর একমাত্র উপযোগী সমাধান। তবে মূল পর্বের প্রাথমিক গণনাতেও কট্টরপন্থীরা জয়ী হলেন। এখন ফ্রান্সে কারা সরকার গঠন করছেন এজন্য পরের রাউন্ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
Leave a Reply