বিশেষ সংবাদ:
‘বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্ডকারীভাবে রক্ষা ও আন্তঃরাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে এবং জাতীয় রাজস্ব আয় ফাঁকি প্রতিরোধ করতে’ পূর্ণাঙ্গ রায়ে জাতীয় সংসদকে চারটি পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর মধ্যে রয়েছে, সীমান্তরেখা থেকে ১০ মাইল পর্যন্ত বিজিবির সম্পত্তি ঘোষণা এবং সীমান্তরেখা থেকে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ভূমি সম্পূর্ণ খালি ও সমতল রাখা।
গত বছরের ৩ আগস্ট বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর সম্পূর্ণ রায় ১১ জুলাই প্রকাশিত হয়।
রায়ে আদালত বলেছে, বিডিআর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার ওয়াজেদ আলীর নেতৃত্বে বিডিআর এর টহল দলটির যশোর শহরের কাছাকাছি এসে আসামির বসত ঘরে তল্লাশি করার কোনো আইনগত এখতিয়ার আছে কিনা এটি এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অর্থাৎ রায়ে তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা চোরাচালানবিরোধী এই অভিযান ওই সীমানায় পরিচালনা করতে পারে কিনা এমন প্রশ্ন বিবেচনায় নিয়েছেন হাইকোর্ট।
১৯৭২ সালের ‘দ্যা বাংলাদেশ রাইফেলস অর্ডার’ এবং ২০১০ সালের ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন’ পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বলেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মূল দায়িত্ব হলো বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষা এবং আন্তঃ রাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধ করা।
এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিজিবির সীমান্ত এলাকা কতটুকু এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ সীমান্ত রেখা থেকে দেশের ভেতরে কত মাইলের মধ্যে বিজিবির নজরদারীর এখতিয়ার থাকবে?
ওই দুই আইনেই বিজিবির এখতিয়ারাধীন সীমান্ত এলাকা বলা নেই বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।
‘দ্যা রেকর্ড অব জুট গ্রোয়ারস (বর্ডার এরিয়াস) অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ এই আইনটিতে সীমান্ত এলাকার সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত এলাকার মধ্যে পাট চাষিদের এবং যে জমিতে পাট চাষ করা হয় সেসবের রেকর্ড রাখার জন্য এই আইনটি করা হয়।
এই আইনের একটি ধারা পর্যালোচনা করে রায়ে বলা হয়েছে, সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের ভেতরে ১০ মাইল পর্যন্ত এলাকাকে সরকার ১৯৭৪ সালে ‘‘সীমান্ত এলাকা’ বা ‘বর্ডার এরিয়া’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।সুতরাং এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশ রাইফেলস বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কার্যপরিধি তথা এখতিয়ারাধীন এলাকা সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল’’ রায়ে বলা হয়েছে।
ফলে বিডিআর সদস্যরা সীমান্ত এলাকা অর্থাৎ ১০ মাইল সীমানার বাইরে যেয়ে যশোর শহরের কাছাকাছি ওই তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেছে। তাই ওই অভিযান এবং মামলা দুইটিই এখতিয়ার-বিহীন বলে রায়ে বলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র-ইত্তেফক ডিজিটাল
Leave a Reply