বিশেষ সংবাদ :
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় কর্মবিরতিতে রয়েছেন চিকিৎসকরা। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। তবে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতার কারণে এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, আজ সকাল থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন। গতকাল একদল বহিরাগত এসে সমস্যা সৃষ্টি করে। তাঁরা অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে চিকিৎসকদের বের করে নিয়ে এসে মারধর করে।
জানা যায়, শনিবার সকালে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যু হয়। এরপর ওই শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিইউবিটির শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে আসেন। ঢাকা মেডিকেলে এসে তারা দাবি করেন, অবহেলার কারণে তাদের দীপ্ত মারা গেছেন।
পরে ওইদিন বিকেলে দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারধর করা হয়। এ সময় আহত হন নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান, মাশরাফি ও জুবায়ের।
এ ঘটনায় চিকিৎসকেরা দোষীদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। তবে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আগেই কর্মবিরতিতে গেছেন তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিতে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
কর্মবিরতির কারণ সম্পর্কে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিউরোসার্জারির রেসিডেন্ট ডাক্তারকে সন্ত্রাসী কায়দায় মারধর ও হাসপাতাল ভাঙচুরের প্রতিবাদস্বরূপ কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এদিকে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত ছাড়াই ডিউটি ডাক্তারদের নির্মমভাবে প্রহার ও আক্রমণের প্রতিবাদে দুই দফা দাবি জানিয়েছেন সকল চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ৩১ আগস্ট রাত ১০টার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বাংলাদেশের সকল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সকল ডাক্তারদের পূর্ণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সেনাবাহিনী তথা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে (দ্রুত সময়ের মধ্যে)। ১২ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ, মামলা দায়ের এবং আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ), পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার পরিষদ।
Leave a Reply