বিশেষ প্রতিবেদন :
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। একপর্যায়ে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে ব্যাপকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চায় দলটির হাইকমান্ড। রূপরেখাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩১ দফার প্রতিটি দফা নিয়ে সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরিকল্পনা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্র মেরামতের এ রূপরেখায় কিছু সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে পেশাজীবী ও সুধী সমাজের মতামত নেওয়ার চিন্তা করা হয়। যার মুখ্য ভূমিকায় থাকবে দলের মিডিয়া সেল। এসব পরিকল্পনা নিয়ে একাধিকবার মিডিয়া সেলের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন তারেক রহমান।
জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান কালবেলাকে বলেন, দেশের মালিকানা দেশের জনগণের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবার মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা দিয়েছেন। যেমনটি দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা ঘোষণা করেছিলেন। সবমিলিয়ে ৩১ দফাকে সামনে রেখে এগোলে বাংলাদেশ হবে একটি দৃষ্টান্ত। বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার কালবেলাকে বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থা তো অনেকদিন ধরেই অনেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। এটা তো ভালো দাবি। অনেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছেন। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে উচ্চকক্ষসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং জাতীয় সরকারের কথা বলছে, যা ভালো বিষয়। কারণ তারেক রহমান যা বলেছেন, সেখানে তো তার দলের কোনো স্বার্থ আছে বলে আমার মনে হয় না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠভাবে জয়ী হলে তাদের আধিপত্য বিস্তারের সম্ভাবনা থাকে। উচ্চকক্ষ থাকলে সেই সুযোগটা কমে যাবে। অন্যদিকে জাতীয় সরকার থাকলে যারা শাসন করতে চায়, তারা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কার করবেন, কাজ করবেন। এটাও ভালো বিষয়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, বিএনপির পক্ষে জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষ সংসদের যে ধারণা উপস্থাপন করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আনন্দদায়ক ও শুভকর। বাংলাদেশের বিভক্ত সমাজ ও জটিল সমাজ বিন্যাসে এই ধরনের প্রস্তাব বাস্তবসম্মত। এর আগেও অনেকে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। এই ব্যবস্থায় আপার হাউসে সব ধরনের মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকে। এই ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হতে পারে আগামী নির্বাচনের আগেও। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের কার্যক্রম ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়। সম্প্রতি তারেক রহমান জাতীয় সরকার ও সংসদীয় ব্যবস্থা নিয়ে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিরাট ব্যাপার। তার নেতৃত্বের যোগ্যতা অসম্ভব রকম সন্তুষ্টির বিষয়।
বিএনপির চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব দলেই শুধু নয়, বিদেশেও প্রশংসা পাচ্ছে। কূটনীতিকরা তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখছেন। কেননা, তারেক রহমান যে একজন দূরদর্শী নেতা, সেটি তার ৩১ দফা ঘোষণার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। এখন ৩১ দফা সামনে রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কার করলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম বলেই মনে হয়।
Leave a Reply