বিশেষ প্রতিবেদন :
সিনওয়ারের মৃত্যুর পরে হামাসের সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া ঠেকাতে হামলা বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল। শুক্রবার তাদের বিরাট বাহিনী উত্তর গাজ়া ভূখণ্ডে ঢুকতে শুরু করে।
হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার পরে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ্য করে ধেয়ে এল ক্ষেপণাস্ত্র। লেবানন থেকে দক্ষিণ হাইফার সেসরিয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবনের কাছে এসে ক্ষেপণাস্ত্রটি আজ যখন পড়ে, নেতানিয়াহু এবং তাঁর স্ত্রী সেখানে ছিলেন না।
বুধবার ইজ়রায়েলি সেনার হামলায় হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছে। তা নিশ্চিত হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষায়। ইজ়রায়েলের জেলে বন্দি থাকার সুবাদে সিনওয়ারের ডিএনএ প্রোফাইল তাদের কাছে ছিল। ইজ়রায়েলি সেনা তাঁর আঙুল কেটে পাঠিয়েছিল পরীক্ষায়। ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। ইজ়রায়েল সিনওয়ারের শেষ মুহূর্তের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ধুলোয় ঢাকা চেয়ারে এলিয়ে রয়েছেন সিনওয়ার। ডান হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। পাশ দিয়ে ড্রোন উড়ছে। সেটি লক্ষ্য করে লাঠি ছুড়ে মারছেন তিনি। তাঁর দেহের সুরতহালের তত্ত্বাবধান করা এক চিকিৎসক আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয় ৬১ বছর বয়সি হামাস নেতার। তার আগে গুরুতর জখম হয়ে পড়েছিলেন। একটি হাত থেঁতলে গিয়েছিল শার্পনেলের আঘাতে। বিদ্যুতের তার দিয়ে হাত বেঁধে তা আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যথেষ্ট শক্ত করে বাঁধতে পারেননি।
সিনওয়ারের মৃত্যুর পরে হামাসের সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া ঠেকাতে হামলা বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল। শুক্রবার তাদের বিরাট বাহিনী উত্তর গাজ়া ভূখণ্ডে ঢুকতে শুরু করে। প্যালেস্টাইনিদের সব থেকে বড় শরণার্থী শিবির রয়েছে উত্তর গাজ়ার জাবালিয়ায়। শুক্রবার জাবালিয়ায় ইজ়রায়েলি হামলায় অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৮৫ জন জখম হয়েছেন বলে খবর। হামাস পরিচালিত গাজ়া প্রশাসনের দাবি, ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও অনেকের দেহ আটকে রয়েছে। ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নির্বিচারে রাস্তা এবং বাড়িঘর ধ্বংসের।
গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের যে হামলায় ১২০০ জনের বেশি ইজ়রায়েলির মৃত্যু হয়, তার মূল মাথা ছিলেন সিনওয়ার। তাঁর মৃত্যুর পরে নেতানিয়াহু হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করে ইজ়রায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু সিনওয়ার-পরবর্তী হামাসের সব থেকে প্রভাবশালী নেতা খলিল আল-হায়া জানিয়েছেন, ইজ়রায়েলি সেনা গাজ়া ভূখণ্ড থেকে না সরা পর্যন্ত বন্দিমুক্তির প্রশ্নও ওঠে না। প্রত্যাঘাত আরও জোরদার হবে।
এই আবহে, আজ নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ করে হামলার ঘটনা। আজই ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা লেবানন থেকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে উড়ে আসা দু’টি ড্রোনকে নিষ্ক্রিয় করেছে। অবশ্য লেবানন থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উড়ে আসা একটি ড্রোন
সেসারিয়ার একটি বাড়িতে আটকে যায় এবং বিস্ফোরণ হয়। তবে কারও মৃত্যু হয়নি।
Leave a Reply