বিশেষ প্রতিবেদন :
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে গাজীপুর নগরীর সারাবো এলাকার বেক্সিমকোর কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে নগরীর পানিশাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা ‘ডরিন ফ্যাশন’ নামের আরেকটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকেরা সাভারের আশুলিয়ায় জিরানি বাজারের পাশে ‘অ্যামাজন নিটওয়্যার’ নামের আরেকটি পেশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম বলেন, “উত্তেজিত শ্রমিকরা সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেন। তখন ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা পৌনে ২টার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনে।”
কারখানা শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গত দুইদিনের মতো বেক্সিমকোর শ্রমিকরা সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চক্রবর্তী এলাকায় রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন ওই এলাকার আশপাশের অন্তত ২০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। রোববার কারখানা খুলে দেওয়া হলেও সোমবার দুপুরের পর আবার ছুটি ঘোষণা করা হয়।
সোমবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানায় এসে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার নোটিস দেখতে পান। পরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানি এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই সময়ে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরাও একই স্থানে অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কয়েকজন আহত হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন।
পরে শ্রমিকেরা পানিশাইল ও কলতাসুতি এলাকায় ঢুকে পড়ে এলাকার লোকজনদের মারধর করেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। বেশ কিছু সময় ত্রিমুখী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকোর কিছু শ্রমিক পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, “বেক্সিমকো শ্রমিকেরা বেতন ছাড়া সড়ক থেকে যেতে চাচ্ছে না। বিষয়টির সমাধান করা উচিত। এখানে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আশপাশের ২০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।”
এদিকে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবরোধ করে রেখেছিল বলে কাশিমপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
Leave a Reply