1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
একনেকে ১০ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় দুই হাজার কোটি টাকা সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ও কন্যার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন চাঁদপুরে জাহাজ থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ: টিউলিপের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের দুই ম্যাচের সূচি বিশ্বে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী-মসজিদের ইমাম একসঙ্গে পালিয়েছেন: দুদক চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে বড় জমায়েত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বদলে গেলো যমুনা নদীতে নবনির্মিত রেলসেতুর নাম

ভুল ঘোড়ার পেছনে বাজি ধরেছে চীন

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৩ বার ভিউ

বিশেষ প্রতিবেদন :

গত তিন দশকে চীনের দ্রুতগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং তার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি—দেশটিকে আঞ্চলিক শক্তি থেকে বৈশ্বিক শক্তিকেন্দ্র হিসেবে উত্তরণ ঘটিয়েছে।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাৎসরিক প্রতিবেদনে স্বীকার করে নেওয়া হয়, চীনই যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী যে দেশটির আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নতুন করে সাজানোর সক্ষমতা আছে। চীন পরাশক্তি হিসেবে তার মর্যাদাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে।

জাতীয় পুনর্জীবন কৌশলে চীনের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)। চীনের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ এটি। এ কৌশলটি চীনের সামরিক-বেসামরিক একীভবন (এমসিএফ) ধারণার সঙ্গে মিলে যায়। এ ধারণার মূলে রয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সামরিক সক্ষমতা সমান্তরালে বাড়তে থাকবে।

বিআরআই প্রকল্পে ছয়টি অর্থনৈতিক করিডর রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান করিডরটি হলো বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) করিডর, যেটা পরে চীন-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর (সিএমইসি) নামে পরিচিতি পেয়েছে। সিএমইসি করিডরটি চীনের ইয়েনান প্রদেশ থেকে মিয়ানমারের গভীর সমুদ্রবন্দর চাকপিউ পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মাধ্যমে চীন বঙ্গোপসাগরে সরাসরি প্রবেশের অধিকার পেয়েছে।

করিডরটি ‘মালাক্কা দ্বিধা’ থেকে চীনকে উদ্ধার করেছে। এই করিডর চীনের জ্বালানি সরবরাহ ও প্রাকৃতিক সম্পদের রসদের জোগান নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চীনের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিএমইসি করিডরটি চীনের ‘স্ট্রিং অব পার্লস’ কৌশলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কেননা স্ট্রিং অব পার্লস কৌশলের মূলে রয়েছে ভারত মহাসাগর ঘিরে একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করা। এ কৌশলটি আবার চীনের ‘দুই মহাসাগর’ (প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগর) কৌশলের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এ প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারে ক্ষমতায় যে–ই থাকুক না কেন, দেশটিকে চীনের প্রভাববলয়ে রাখা চীনের জন্য অপরিহার্য। যাহোক সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বলছে যে চীন মিয়ানমারে ভুল ঘোড়ার পেছনে তার জুয়ার বাজি ধরেছে।

ঐতিহাসিকভাবে মিয়ানমারে চীন তার প্রভাব ধরে রেখে এসেছে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলের জাতিগত প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে।

সরকারের বৈধতার প্রশ্নটি তো আছেই, কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে জান্তা সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে জনগণের পক্ষে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৬০ বছরের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার জাতিগোষ্ঠীর কাছেও অশ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠেছে।
দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করে আসছে। চীন দুই পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করে, যাতে মিয়ানমারে তাদের বাণিজ্যের পরিবেশ স্থিতিশীল থাকে এবং বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকে।

২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রাথমিক পর্যায়ে চীন মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে প্রকাশ্যে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া থেকে বিরত থাকে। যা–ই হোক, মিয়ানমারে বসন্ত বিপ্লব যতই গতি পেতে থাকে এবং যুদ্ধক্ষেত্রের গতিমুখ যতই পরিবর্তন হতে থাকে, চীনের অবস্থান ততই পাল্টাতে থাকে।

মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সম্মিলিত অভিযান (অপারেশন–১০২৭) শুরু হলেই সেখানকার ক্ষমতার ভারসাম্যে বাঁকবদল শুরু হয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের কাছে উত্তর শান প্রদেশে বিশাল অংশের ভূখণ্ড হারায়।

একইভাবে রাখাইনে আরাকান আর্মি (এএ) বিশাল ভূখণ্ড নিজেদের অধিকারে নিয়েছে। কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ চাকপিউ বন্দরের আশপাশের এলাকা তাদের দখলে। কাচিন রাজ্যে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মিও অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে।

এ বাস্তবতায় চীন তার অবস্থান পাল্টায় ও খোলাখুলিভাবে মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সমর্থন দিতে শুরু করে। মিয়ানমার ইস্যুতে চীনের অবস্থান বদলের সূচনা হয় এ বছরের আগস্টে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর নেপিদো সফরের মধ্য দিয়ে। এর চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখি নভেম্বরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইংয়ের চীন সফরের মাধ্যমে। অভ্যুত্থানের পর এটিই ছিল তাঁর প্রথম সফর।

চীন তাদের সীমান্তসংলগ্ন প্রদেশগুলোর সশস্ত্র গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) ওপরও চাপ তৈরি করেছে। সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে তাদের বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করেছে। এসব বিদ্রোহী যেন মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার ও তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের সঙ্গে সম্পর্ক এড়িয়ে চলে, সেই দাবি চীন করেছে।

এ ছাড়া চীন তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষা দিতে ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার গ্রুপের মতো ব্যক্তিমালিকানাধীন নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত মিয়ানমারের জন্য হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পতন অনিবার্য, সেটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। চীনের সঙ্গে সীমান্ত নেই, এমন অনেক অঞ্চলের জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী যেমন আরাকান আর্মি, কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন, কারনেনি ন্যাশনালিটিস ফোর্স এবং চীন গোষ্ঠী চীনের সরাসরি প্রভাবের বাইরে।

এ ছাড়া সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠী টিএনএলএ এবং এমএনডিএএ–ও অস্ত্রবিরতি চুক্তি করার পরও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া এই গোষ্ঠীগুলো মনে করে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অধীন সত্যিকারের স্বায়ত্তশাসন ও নিরাপত্তা অসম্ভব একটা ব্যাপার। তারা মনে করে, একটা ফেডারেল ধরনের গণতান্ত্রিক মিয়ানমারই সেই নিশ্চয়তা দিতে পারে।

অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়, জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জাতীয় ঐক্য সরকার এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। ভূরাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে তারা এখনই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছে না।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার এখন দেশটির জনগণের মধ্যে ব্যাপক অজনপ্রিয়।

সরকারের বৈধতার প্রশ্নটি তো আছেই, কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে জান্তা সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে জনগণের পক্ষে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৬০ বছরের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার জাতিগোষ্ঠীর কাছেও অশ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠেছে।

এর বিপরীতে জাতীয় ঐক্য সরকার চীনের প্রতি বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছে। তারা চীনের বিনিয়োগ সুরক্ষার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ জন্য তারা ‘চীন বিষয়ে অবস্থান’ শীর্ষক ১০ দফা দিয়েছে।

চীনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যে কঠোর অবস্থান নেবে, তাতে করে চীন আন্তর্জাতিক পরিসরে মিত্র বাড়িয়ে লাভবান হতে পারে। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের বৈধতা জান্তা সরকারের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে চীন যদি জাতীয় ঐক্য সরকারের সঙ্গে মৈত্রী করে, সেটা তাদের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি ও সুনাম অনেক বাড়াবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com