1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
ঢাকা-৫ আসনের সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি কর্তৃক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ১০ সদস্য গ্রেফতার হারিয়ে যাওয়া ৭৯টি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিলো পল্টন থানা পুলিশ প্রধান উপদেষ্টার সাথে চবি উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ ও ৫ম সমাবর্তনে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশীয় অস্ত্রসহ পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের তিন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগ যৌথ বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত উল্লেখযোগ্য অভিযানসমূহের সারসংক্ষেপ (১০-১৭ এপ্রিল): সারাদেশে আটক ৩৯০ খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ক্যাশিয়ার’ মোশাররফ গ্রেফতার আইজিপি কাপ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২৪-২৫ এর শুভ উদ্বোধন মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ পেশাদার ছিনতাইকারী শাকিলকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ ভাটারায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডিবি

শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৫ বার ভিউ

বিশেষ প্রতিবেদন :

সংরক্ষিত বনের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে রেলপথ। কাটা পড়ে কয়েক লাখ গাছ। রেলপথ বসানোর জন্য একের পর এক পাহাড় কেটে সমতল করা হয়। এর ফলে বিপন্নপ্রায় এশিয়ান হাতি চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ করতে গিয়ে পদে পদে পরিবেশের ক্ষতি করা হয়। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায় থাকায় বন বিভাগ কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তর কেউ-ই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা দেয়নি। উল্টো সংরক্ষিত বনের তালিকা থেকে প্রকল্প এলাকাকে বাদ দেওয়া হয়। অবশ্য প্রকল্পের কাজ করার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণে চারটি শর্ত বেঁধে দিয়েছিল বন বিভাগ। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কাজ প্রায় শেষ করলেও শর্তগুলো পুরোপুরি প্রতিপালন করেনি।

শর্ত না মেনে কাজ শেষ করায় বিপন্নপ্রায় হাতি চলাচলে ঝুঁকি রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ট্রেনের ধাক্কায় একটি বাচ্চা হাতি মারা গেছে। খাড়াভাবে কাটার কারণে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের ঘটনাও ঘটছে। এতে ট্রেন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চারটি শর্তে সংরক্ষিত বনকে ‘ডি রিজার্ভ’ (সংরক্ষিত তালিকা থেকে বাদ) ঘোষণা করে ২০১৯ সালের ৬ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। নির্মাণকাজ শেষে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

এ প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাসে শেষ হবে। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ।

শর্ত মানেনি রেল, চিঠি বনের
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের ২৭ কিলোমিটার গেছে সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে। লোহাগাড়ার চুনতি, ফাঁসিয়াখালী ও মেধাকচ্ছপিয়া সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে এই রেলপথ গেছে। রেললাইন নির্মাণ করার জন্য বনের ২০৭ একর জায়গাকে সংরক্ষিত বন থেকে বাদ দেওয়া হয়।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চারটি শর্ত হচ্ছে: ১. বরাদ্দ দেওয়া বনভূমিতে বিদ্যমান গাছপালার মূল্য বাবদ ১০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা পরিশোধ করবে রেল। ২. পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিপূরণের জন্য যে পরিমাণ গাছের ক্ষতি হবে, তার তিন গুণ গাছ লাগাতে হবে বন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রেললাইনের দুই পাশে। আগামী ১০ বছর তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। ৩. বন্য হাতিসহ সব বন্য প্রাণীর নিরাপদ চলাচলের জন্য আন্তর্জাতিক মানের ওভারপাস ও আন্ডারপাস নির্মাণ করতে হবে। ৪. রেলগাড়ির শব্দে বনাঞ্চলে থাকা বন্য প্রাণীর যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট অংশ রেলওয়েকে সাউন্ড ব্যারিয়ার বা শব্দ প্রতিবন্ধকতা নির্মাণ করতে হবে।

এসব শর্তের সূত্র ধরে একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি হয়। বনায়ন এবং বন্য প্রাণীর আবাসস্থল সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ১৬টি শর্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয় চুক্তিতে।

তবে এসব শর্ত ও সমঝোতা চুক্তি রেলওয়ে যথাযথ বাস্তবায়ন করেনি উল্লেখ করে গত ১৭ অক্টোবর রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন তৎকালীন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। চিঠিতে বলা হয়, বন্য হাতিসহ সব বন্য প্রাণীর চলাচলের জন্য ২টি ওভারপাস ও ২টি আন্ডারপাস নির্মাণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে একটি ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি আন্ডারপাস করা হলেও তা ঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি। একটি আন্ডারপাস দিয়ে হাতি চলাচল করতে পারে না। এ ছাড়া সাউন্ড ব্যারিয়ার নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।

এদিকে রেললাইন করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ লাখ ৩৯ হাজার গাছ কাটা হয়। প্রজ্ঞাপনের শর্ত অনুযায়ী, তিন গুণ গাছ রোপণ করার কথা। অর্থাৎ রোপণ করা গাছের পরিমাণ হওয়ার কথা ৭ লাখ ২০ হাজার। কিন্তু এখন পর্যন্ত বন বিভাগের হিসাবে গাছ লাগানো হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার। আবার যে ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে, তা নিয়ে বন বিভাগের আপত্তি রয়েছে।

প্রজ্ঞাপন ও সমঝোতা চুক্তির শর্ত না মানার বিষয়ে জানতে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সবুক্তগীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। নগরের সিআরবিতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে তাঁর কার্যালয়ে অন্তত চার দফা গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সভায় ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

মারা গেছে হাতি
রেলপথের ওপর দিয়ে পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় একটি বাচ্চা হাতি। গত ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল-১০ ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটি আহত হয়।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের এলিফ্যান্ট ওভারপাসের (রেললাইনের ওপর দিয়ে হাতি পারাপারের পথ) উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার দুই দিন পর রেলওয়ের একটি রিলিফ ট্রেনে করে আহত হাতিটিকে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় রেলওয়ে ট্রেনের লোকোমাস্টার (ট্রেনচালক) মো. জামাল উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তবে হাতির মৃত্যুর ঘটনায় নিজের গাফিলতি না থাকার দাবি করে ট্রেনচালক প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আনা হয়েছে অতিরিক্ত গতিতে ট্রেন চালানোর। কিন্তু রেললাইনের যেখানে হাতিটি আঘাত পেয়েছে, সেখানে ট্রেনের নির্ধারিত গতি ছিল ৭০ কিলোমিটার। আর তিনি ওই সময় ট্রেন চালাচ্ছিলেন ৩০-৩৫ কিলোমিটার গতিতে। হাতি রক্ষায় তো কোটি কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। তাহলে হাতি রেললাইনে কীভাবে এল? সেখানে গেট ছিল; কিন্তু তা ছিল খোলা। এ দায় তো ট্রেনচালকের নয়।

হাতির মৃত্যুর পর টনক নড়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। গত ২৩ অক্টোবর অফিস আদেশে বলা হয়, দেশের বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য ও জাতীয় উদ্যান এলাকা অতিক্রম করার সময় ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুনতি সংরক্ষিত বনে ৪০ থেকে ৪৫টি এবং ফাঁসিয়াখালী বনে ৩০ থেকে ৪০টি এশিয়ান হাতি রয়েছে।

ট্রেন চলাচল শুরুর পর প্রথম বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে দুই দফা রেললাইনে পাহাড় ধসে পড়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের চকরিয়ায় হারবাং ইউনিয়নের গাইনা কাটা এলাকায় রেলপথের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল সাময়িক সময়ের জন্য। এর আগে ২২ আগস্টও কক্সবাজার রেললাইনে পাহাড় ধসে পড়ে। ওই সময় অন্তত তিন দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক মো. কামাল হোসাইন বলেন, কক্সবাজারে রেললাইন করতে গিয়ে পরিবেশের চেয়ে উন্নয়নকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল সরকার। তিনটি সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে পরিবেশ তেমন গুরুত্ব পায়নি। আবার পরিবেশ সুরক্ষায় যেসব শর্ত ছিল, সেগুলো পূরণেও রেলওয়ের যথেষ্ট গাফিলতি ও অবহেলা ছিল। এখন শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। তাতে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com