বিশেষ প্রতিবেদন :
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সময়ের পরিক্রমায় এটি একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে, যা জাতীয় প্রতিরক্ষা, শান্তিরক্ষা ও উন্নয়নে অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী দেশের সীমান্ত, সমুদ্রসীমা এবং আকাশসীমা সুরক্ষায় একযোগে কাজ করে আসছে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী একটি শক্তিশালী ও সুশৃঙ্খল কমান্ড কাঠামোর মধ্যে থেকে কঠোর শৃঙ্খলা এবং দক্ষতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) তিন বাহিনীর মধ্যে কৌশলগত সমন্বয় নিশ্চিত করে। এই সুসংগঠিত কাঠামোর ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমন্বিত প্রতিরক্ষা কার্যক্রম এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা সম্ভবপর হয়।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার ফলে তাদের পেশাদারিত্ব, মানবিকতা ও নিষ্ঠা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সর্বদা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উদ্ধার অভিযান, মানবিক সহায়তা ও জাতি গঠনে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সশস্ত্র বাহিনী জরুরি ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর সাথে একত্রে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় কাজ করে এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বরাবরই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখন্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সশস্ত্র বাহিনী অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে। তবে কিছু গণমাধ্যম উদ্দেশ্যমূলকভাবে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এ ধরণের অপপ্রচার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সাফল্য বিশেষ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় অগ্রগণ্য ভূমিকা ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা বলে প্রতীয়মান।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে এ ধরণের মিথ্যা, অপতথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন থাকা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর এই অপপ্রয়াস প্রতিহত করাই আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। তাই, দেশের সকল সচেতন নাগরিকগণের প্রতি এ ধরণের মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে সজাগ থাকা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখার আহবান রইলো। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, অটুট ও অবিচল। যেকোন পরিস্থিতিতে ও যেকোন মূল্যে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী অতীতের মতোই ভবিষ্যতেও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখন্ডতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
Leave a Reply