বিশেষ সংবাদ:
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেইনের যে যুদ্ধ চলছে তা বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের (এমএসসি) ফাঁকে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান বলে বাসস জানিয়েছে।
সম্মেলনস্থল হোটেল বায়েরিশার হফে দুই নেতার এ বৈঠক হয়, যেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, ‘আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে’। আজ জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সময় কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সে বিষয়েও তিনি বারবার আলোচনা করেছেন।”
বৈঠকে দুই নেতা গাজায় নিরপরাধ নারী-পুরুষের ওপর হামলা কীভাবে বন্ধ করা যায়- তা নিয়েও আলোচনা করেন বলে জানান হাছান।
যুদ্ধ কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “যুদ্ধের মাধ্যমে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ লিপ্ত দেশগুলোর জন্য তা কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না এবং তাদের জনগণকে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।”
এ প্রসঙ্গে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভোগের স্মৃতি স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বন্দিদশায় তাকে যে অমানবিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল এবং একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মের কথাও স্মরণ করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও জেলেনস্কির মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
“রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়া আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং যুদ্ধের পর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারা (শেখ হাসিনা ও ভলোদিমির জেলেনস্কি) শুধু যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা করেছেন।”
জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সচিব নূর এলাহী মিনা ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগে একই স্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেলমন্ত্রী পৃথক বৈঠক করেন।
আগের দিন শুক্রবার কাতার ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হয় শেখ হাসিনার।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। এ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখে পৌঁছেন। সফর শেষে সোমবার তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা।
Leave a Reply