বিশেষ সংবাদ:
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাংশে মিশরের সীমান্তবর্তী শহর রাফায় সম্ভাব্য আক্রমণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েল।
পাশাপাশি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য জিম্মি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কাতারে আরেকটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে তেল আবিব; এর মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আশাও জিইয়ে রেখে দিল তারা।
শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার দক্ষিণপ্রান্তের শহর রাফায় আক্রমণের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন নেতানিয়াহু।
গাজায় পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও গোলা হামলায় নিহত হয়েছে প্রায় ৩১৫০০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছে ৭৩ হাজারেরও বেশি। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশ ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মুখে ও নির্দেশনার কারণে গাজার অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা রাফায় আশ্রয় নিয়ে আছে। ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় রাফা অত্যন্ত জনাকীর্ণ একটি শহরে পরিণত হয়েছে। এখানে ইসরায়েলি বাহিনী আক্রমণ চালালে ব্যাপক বেসামরিক মানুষ হতাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এই উদ্বেগ থেকে বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের মিত্ররা ও সমালোচকরা রাফায় আক্রমণ করা বন্ধ রাখতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, শহরটি হামাসের অন্যতম একটি শক্তিশালী ঘাঁটি, তাদের পরাজিত করতে রাফায় সামরিক অভিযান চালানো দরকার।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোতে নজিরবিহীন প্রাণঘাতী হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। ওই হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের। হামলা চলাকালে ইসরায়েল থেকে ২৫৪ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করা হয় বলেও জানিয়েছে ইসরায়েল।
এর প্রতিশোধ হিসেবে হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানিয়ে ওই দিন থেকেই গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের কঠোর অবরোধ ও টানা হামলার মুখে হাজার হাজার স্বজন ও ঘরবাড়ি হারানো গাজাবাসী এখন দুর্ভিক্ষের মুখে আছে।
দেওয়া বিবৃতিতে ইসরায়েল বলেছে, হামলা শুরুর আগে রাফার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেবে তারা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘অভিযানের জন্য এবং রাফার জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য’ প্রস্তুতি শুরু করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাফায় কখন বা কবে ইসরায়েল সামরিক অভিযান শুরু করবে বিবৃতিতে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি এবং শহরটির আশপাশে অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীকে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত কোনো প্রস্তুতি নিতেও দেখা যায়নি।
অস্ট্রিয়া সফরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাফার জন্য ইসরায়েলের কাছ থেকে একটি পরিষ্কার ও বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা দেখতে চায়।
Leave a Reply