বিশেষ সংবাদ:
ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব থেকে একটি কার্গো ফ্লাইটের সরাসরি ঢাকায় অবতরণ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নানামুখি আলোচনা চললেও এক্ষেত্রে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়নি বলে জানিয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
ফেইসবুকে যারা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, তারা একে ‘ইসরায়েলি ফ্লাইট’ বললেও আসলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ, ইসরায়েলি কোনো কোম্পানির নয়। ইসরায়েল থেকে কোনো কার্গোও আসেনি ওই উড়োজাহাজে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, “ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি মূলত ফেরি (কার্গো) ফ্লাইট ছিল। আমেরিকান এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রেই নিবন্ধিত। ইসরায়েল থেকে ফ্লাইটটি এলেও কোনো পণ্য বা যাত্রী ঢাকায় আসেননি। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক নিতে এসেছিল কার্গো ফ্লাইটটি, যা শারজাহ ও ইউরোপের গন্তব্যে যাবে। এ ধরনের ফ্লাইট বৈধ।”
ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তাছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামেও সরব। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে হাজারো ফিলিস্তিনির মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে তেল আবিব থেকে আসা উড়োজাহাজের ঢাকায় অবতরণের বিষয়টি একাধারে কৌতুহল ও নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। অনেকেই সরকারের সমালোচনায় মুখর হন। কেউ কেউ ইরসায়েলের সঙ্গে সরকারের ‘গোপন সখ্যের’ কথাও বলতে শুরু করেন।
তেল আবিব থেকে ঢাকায় ফ্লাইট, আসলে কী ঘটেছে?
ফ্লাইট নজরদারি বিষয়ক ওয়েবসাইট ফ্লাইটরেডার টোয়েন্টিফোরের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে ওই ফ্লাইট তেল আবিব থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা উড়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে।
বোয়িং ৭৪৭-৪০০ মডেলের উড়োজাহাটি একটি কার্গো এয়ারক্রাফট, যা প্রায় ১০৮ টন মালামাল বহন করতে পারে। উড়োজাহাজটি পরিচালনা করে মার্কিন কোম্পানি ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স। ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করা ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স অন-ডিমান্ড কার্গো এবং চার্টার্ড যাত্রীদের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা করে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট (এএসএ) নেই, ফলে দেশটির কোনো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বাংলাদেশে আসতে পারে না। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট রয়েছে। তাই দেশটির যে কোনো এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে আসতে বাধা নেই।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি হওয়ায় ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটও বাংলাদেশে নামতে কোনো বাধা নেই।
“এর আগেও বাংলাদেশে ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এসেছে। বিভিন্ন সময়ে কার্গো পণ্য নিতে এ কোম্পানির ফ্লাইট বাংলাদেশ আসে। বৃহস্পতিবারও ইসরায়েলে পণ্য নামিয়ে খালি উড়োজাহাজ বাংলাদেশে এসেছিল বাণিজ্যিক পণ্য নেওয়ার জন্য, যা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে পৌঁছে দেবে এয়ারলাইন্সটি। এর মধ্যে অবৈধ কিছু নেই।”
Leave a Reply