1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
একনেকে ১০ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় দুই হাজার কোটি টাকা সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ও কন্যার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন চাঁদপুরে জাহাজ থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ: টিউলিপের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের দুই ম্যাচের সূচি বিশ্বে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী-মসজিদের ইমাম একসঙ্গে পালিয়েছেন: দুদক চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে বড় জমায়েত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বদলে গেলো যমুনা নদীতে নবনির্মিত রেলসেতুর নাম

মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ: ভাতা সুদে-আসলে ফেরত নেবে সরকার

  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪
  • ১০৯ বার ভিউ

বিশেষ সংবাদ:

জালিয়াতি, প্রতারণা ও অসত্য তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে যাঁরা সরকারি ভাতা নিয়েছেন, তাঁদের সেই ভাতা সুদে-আসলে ফেরত নেবে সরকার। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা যাঁরা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন, তাঁদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত আট হাজার বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আগামী সপ্তাহ থেকে সব জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হবে। এসব ব্যক্তির কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা ফেরত নিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা রাখা হবে। এ বিষয়ে ‘সরকারি পাওনা আদায় আইন, ১৯১৩’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি ভাতা সুদে-আসলে ফেরত নেওয়ার পরামর্শ, সুপারিশ ও সিদ্ধান্ত এসেছে ১২ জুন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে। আগামী রোববার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর শুরু হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা আট হাজার “মুক্তিযোদ্ধা সনদ” আমরা বাতিল করেছি। আমরা জানি, ভাতা আদায়ের বিষয়টি অত্যন্ত কঠিন। আমরা প্রত্যেকের জন্য একটি করে ফাইল খুলব। একেকজন একেক সময়ে ভাতা নিয়েছেন, কে কত টাকা নিয়েছেন সেটি যেমন খুঁজে বের করতে হবে, একইভাবে কার সুপারিশে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছিলেন, সেটাও আমরা অনুসন্ধান করব। এ বিষয়ে মামলা হতে পারে, রিট হতে পারে; কিন্তু আমরা সরকারি টাকা আদায় করে ছাড়ব।’

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য এবং সরকার অনুমোদিত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই করে ভাতাপ্রাপ্ত সব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ২০২০ সালের অক্টোবরে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) নামের একটি সফটওয়্যারে যুক্ত করা হয়। নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় ‘লাল মুক্তিবার্তা’, ‘ভারতীয় তালিকা’ ও ‘গেজেট’। বর্তমানে এই সমন্বিত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় দুই লাখ পাঁচ হাজার। শুরুতে এমআইএসে তাঁদের নামসহ অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার পর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যাঁদের নাম এমআইএস এবং সমন্বিত তালিকায় রয়েছে, তাঁদের মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল সনদ প্রস্তুত করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশদের মাঝে বিতরণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল সনদ বিতরণের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১৩টি নির্দেশনা রয়েছে। ওই নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে, ‘ইতিমধ্যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বা সনদ বাতিল হয়ে থাকলে তাঁদের ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখতে হবে।’

এর আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমানের স্ত্রী ছালেহা খাতুনের মৃত্যুর পর তাঁর নামে ভুয়া হিসাব খুলে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার প্রায় আট লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক দুই নেতা এনামুল হক বিশ্বাস ও মোহাম্মদ আলী। বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁরা নিজেরাই ভাতার টাকা ফেরত দিয়েছেন। অনিয়মের মাধ্যমে নেওয়া ভাতা ফেরত দেওয়া ব্যক্তিদের একজন সিরাজগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে দুই উপজেলা থেকে (কাজীপুর ও ধুনট) ভাতা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ধুনট থেকে পাওয়া ভাতা বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছেন এবং ভাতা ফেরত দেবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

অতীতে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের প্রতারণা চিহ্নিত হলেও কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল; কিন্তু কারও বিরুদ্ধেই কোনো মামলা বা আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সরকারের পাঁচ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় ২০১৪ সালে। ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব এম নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন সচিব এ কে এম আমির হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী এবং একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম তালুকদারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। বাতিল করা হয় সাবেক সচিব এবং প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন বেসরকারীকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের সনদও। সনদ ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁদের স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ছিল। তাঁদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে আইনি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক); কিন্তু ১০ বছরে কোনো মামলা হয়নি। এ ছাড়া চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণা করেননি, অথচ পরে সনদ নিয়েছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া যায় একজন সচিবসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ভুল ব্যাখ্যা ও অসত্য তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাময়িক সনদ নিয়েছিলেন সাবেক উপসচিব শেখ আলাউদ্দিন। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশ ছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুও করেছিল; কিন্তু সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। বরং তিনি পেনশনের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

অসত্য তথ্য দিয়ে দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানী ভাতা নিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাবেক প্রধান শেখ হিমায়েত হোসেন। চাকরির বয়স ৫৯ হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (অবসর) আইন অনুযায়ী তিনি অবসরে যান; কিন্তু সম্মানী ভাতার টাকা ফেরত দেননি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, শুধু যাঁরা ভুয়া সনদ নিয়েছেন, তাঁদের নয়, যাঁরা এসব সনদের জন্য সুপারিশ করেছেন, সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ফৌজদারি আইনের ৪১৬ ধারা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিলে তা অপরাধ। এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য তিন বছর জেল এবং মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ দেখিয়ে ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হওয়ার কথা; আর মুক্তিযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদ নেওয়ায় অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছরে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) নতুন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য ১০ হাজার ৮৯১ জনের নাম সুপারিশ করেছে এবং ২ হাজার ১৯০ জনের নামের গেজেট বাতিল হয়েছে। যাঁরা নতুন করে তালিকায় যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মেয়র ও সংসদ সদস্যও রয়েছেন। ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল জামুকার সভায় বরিশালের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। পরের সভায় গাইবান্ধা-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেনকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।

জামুকা সূত্র জানায়, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত সাতবার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে; আর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় অন্তুর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বয়স, সংজ্ঞা ও মানদণ্ড পাল্টেছে ১১ বার।

বর্তমানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। তা ছাড়া দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা, বিজয় দিবসে পাঁচ হাজার টাকা এবং বাংলা নববর্ষে দুই হাজার টাকা ভাতা পান। একজন বছরে সব মিলিয়ে পান প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা ও অসত্য তথ্য দিয়ে যাঁরা সনদ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ফৌজদারি মামলা করা উচিত। শুধু সনদ বাতিল বা ভাতা আদায় কোনো শাস্তি নয়।

প্রতিবেদক- রোজিনা ইসলাম, প্রথম আলো

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com