বিশেষ সংবাদ:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে জিম্মি করে ঘের দখল, অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মূলহোতাসহ ০৪ জন অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫। মঙ্গলবার, ২ জুলাই, র্যাব-১৫ এর একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার, ১ জুলাই, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারের? চকরিয়া থানার কোরালখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের প্রধান বেলাল হোসেন (৪৫), পিতা-আকবার আহম্মেদ সহ ৪ জনকে আটক করে। বাকি আটককৃতরা হলেন; কামাল আহম্মেদ (৪২), পিতা-আকবর আহম্মেদ, আব্দুল মালেক (৩২), পিতা-আকবর আহম্মেদ, নুরুল আমিন (৩৫), পিতা-মৃত জহির আহম্মেদ চকরিয়া, কক্সবাজার’দেরকে গ্রেফতার করে।
চকরিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সারা বছর লবণ চাষ এবং বাকি মাসগুলোতে চিংড়ি চাষ করা হয়ে থাকে। মূলত লবণ চাষের মৌসুম শেষে চিংড়ি চাষের প্রস্তুতি শুরু হলেই সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দল ঘের মালিকদের নিকট চাঁদা দাবি করে। এছাড়া অস্ত্রের মহড়ার মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে ঘের দখল করে। প্রায়ঃশই সশস্ত্র ডাকাত দল মাছের ঘেরে লুটপাট ও অন্যান্য নাশকতা সৃষ্টি করে।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার বিলুপ্তপ্রায় সুন্দরবন তথা চিংড়ি জোনে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব ও লুটপাটের কয়েকটি ঘটনা ঘটে। গত ১৯ জুন ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাতে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ মৌজার গোলদিয়ায় ১০ একর বিশিষ্ট সাতটি ঘেরে (৭০ একর) হানা দেয় একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। এ সময় তারা অন্তত শতাধিক ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। অস্ত্রের মুখে ঘের কর্মচারীদের জিম্মি, হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব।
উক্ত অভিযানে উদ্ধার করা হয় ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২ বোর ৪০ রাউন্ড, ৭.৬২ মিঃ মিঃ ১০ রাউন্ড এবং ৭.৬৫ মিঃ মিঃ ২ রাউন্ড। জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। গ্রেফতারকৃত বেলাল, কামাল এবং মালেক আপন তিন ভাই। তারা অস্ত্রধারী ডাকাতদের নিয়ে “বেলাল বাহিনী” গড়ে তুলে মাছের ঘের দখল, লুটতরাজ, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল।
ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজারের চকরিয়াসহ পার্শ্ববর্তী মহেষখালী, কুতুবদিয়া এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখল, চিংড়ি ঘের দখল, লবণের মাঠ ও আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ডাকাতি, চিংড়ি ঘের দখল ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ মোহাম্মদ আলি বলেন ; আটককৃতদের থানায় সোপর্দ করা হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply