সরেজমিন প্রতিবেদন :
গত কালকের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের এ আন্দোলনের সাথে যোগ দিয়েছে সর্বস্তরের জনগণ। কক্সবাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে শুরু হয়ে প্রেস ক্লাবে এসে শেষ হয়। একইভাবে মিছিল হয়েছে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলাতে ।
পুরো চট্টগ্রাম জেলায় মিছিল লক্ষ্য করা যায়। চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট মোড় অবরোধ করে মিছিল করতে থাকে ছাত্র জনতা। এ সময় তারা এক দফা দাবিতে পুরো এলাকা মুখরিত করে ফেলে। সকাল থেকেই তারা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে এসে ঝড় হতে থাকে। আন্দরকিল্লা, চকবাজার, মুরাদপুর, ষোল শহর, টাইগার পাস, আগ্রাবাদ, ইপিজেড প্রভৃতি এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট চত্বরে জ্ড় হতে থাকেন। এ সময় ছাত্র-জনতার স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় চারপাশ। দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ছাত্র-জনতা এখানে অবস্থান করে। তাদের সকলের মুখেই একটি স্লোগান ছিল। সেটা ছিল দফা এক দাবি এক স্বৈরাচারের পদত্যাগ।
দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী ছাত্ররা মিছিল করেছে ফেনীতে। ফেনী শহরের টাংঙ্ক রোড এলাকায় ছাত্ররা সকাল থেকেই জ্ড় হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট মহিপাল, সালাউদ্দিন মোড়, হাসপাতাল মোড়, লালপোল প্রভৃতী স্থান থেকে এসে ছাত্ররা শহরের প্রাণকেন্দ্র টাংঙ্ক রোডের খেজুর তলায় এসে জড়ো হয়। দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করে। এর পর জিরো পয়েন্ট থেকে মহিপালে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।
দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী কুমিল্লা শহরেও মিছিল বের করা হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সময় তাদের সাথে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ বাদে। সংঘর্ষের সময় দুর্বৃত্তের গুলিতে তিনজন ছাত্র আহত হয়। এদের মধ্যে থেকে একজন পরবর্তীতে মারা যায়। একইভাবে মিছিল হয়েছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে।
গতকাল থেকেই খুলনা শহরে রাতভর পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ ছিল। আজও তারা মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে। এক দফা দাবিতে মিছিল হয়েছে যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাতেও।
বরিশালে বিএল কলেজ অবরোধ করে মিছিল করে ছাত্ররা। ছাত্রদের এই মিছিলে যোগ দেয় সাধারণ মানুষও। একইভাবে মিছিল হয়েছে ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালীতে।
ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে ও মিছিল হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একই দাবিতে মিছিল হয়েছে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ও রাজবাড়ীতে।রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল নিয়ে আসলে আন্দোলনকারীদের কে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় মিছিলে ছাত্র ভঙ্গ হয়ে যায়।
রাজশাহীতেও একই দাবিতে মিছিল করেছে জনগণ ও ছাত্ররা। শহরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জড় হয়ে তারা মিছিল স্লোগানে মুখরিত করে পেলে। একই দাবিতে মিছিল হয়েছে নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতেও। বগুড়াতে দুপুর হওয়ার সাথে সাথেই। ছাত্র-জনতা বগুড়া জিরো পয়েন্টে জড় হতে থাকে। সেখানে হাজারেরও বেশি মানুষ জ্ড় হয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
রংপুরের টাউন হলে এসে জ্ড় হয় ছাত্র জনতা। সেখানে গিয়েই তারা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তলে পুরো এলাকা। একইভাবে মিছিল হয়েছে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, এবং দিনাজপুর জেলাতেও।
ময়মনসিং শহরের টাউনহলে জ্ড় হয় ছাত্ররা। সেখানে তারা বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে জ্ড় হয় এবং স্লোগান দিতে থাকে। একই দাবিতে মিছিল হয়েছে। টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর এবং নেত্রকোনা জেলায়।
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। তাদের এই মিছিলে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। এই মিছিল এক দফা দাবিতে মাঠে থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। একই দাবিতে মিছিল হয়েছে। হবিগঞ্জ সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার জেলাতে।
রাজধানী ঢাকা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে মিছিল হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে মিরপুর, উত্তরা, ধানমন্ডি, বাড্ডা, শনির আখড়া,খিলক্ষেত, আজমপুর,ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন স্থানে মিছিল হয়েছে। দুপুরের পরে সকল মিছিল একযোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে মিলিত হয়। দুপুর ২ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান করছিল। একই দাবিতে মিছিল হয়েছে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ জেলাতেও। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সন্ধ্যা ছয়টার সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ঘোষণা করেন যে,আগামীকাল থেকে অসহযোগ আন্দোলন পরিচালিত হবে। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে তাদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। এ আহবানে প্রত্যেক মানুষ সাড়া দিবে বলে তারা আশা করে। তারা বলে আমরা নয় দফা দাবি দিয়েছিলাম। কিন্তু গতকালকেও দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আমরা এক দফা দাবিতে চলে এসেছি। এখন আমাদের দাবি একটাই। দফা এক দাবি এক,স্বৈরাচারের পদত্যাগ।
Leave a Reply