বিশেষ প্রতিবেদন :
দুর্নীতির মামলায় ডেপুটি পোস্ট মাস্টার মোস্তাক কারাগারে
সোয়া ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার আসামি ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. নাজির আকন্দ নাকিব আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এই আদেশ দেন।
এর আগে আজ সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২০ আগস্ট প্রকল্পের ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক শুধাংশু শেখর ভদ্র এবং ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে ‘পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ শীর্ষক প্রকল্পের বরাদ্দ করা ১৫ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকার ৫০০টি এইচপি সার্ভার ও ইউপিএস ক্রয় করে তা ব্যবহার না করে সরকারি অর্থের অপব্যবহার করেছেন।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ডাক বিভাগের ‘পোস্ট-ই-সেন্টার’ শীর্ষক প্রকল্পের বরাদ্দ করা ১৫ কোটি ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকায় ৫০০টি এইচইপি সার্ভার ও ইউপিএস কিনে তা ব্যবহার না করে, সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯-এর ২৩ ধারা লঙ্ঘন পূর্বক সরকারি অর্থের অপব্যবহার করেছেন। প্রকল্পের অধীন ৫০০টি এইচপিই এমএল ৩০ ও উইনার ব্র্যান্ডের ইউপিএসসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক সামগ্রী ক্রয়ের জন্য সরকারি মালিকানাধীন টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) সঙ্গে চুক্তি করা হয়। পরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডাকঘরগুলোতে বিতরণ করা হয়।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মো. মুহিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। ওই তদন্তেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুন মাসে শেষ হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ চালানে কোনো কোনো মালামাল প্রকল্প সমাপ্তির প্রায় দুই বছর পর সরবরাহ করা হয়েছে। টঙ্গী, গাজীপুর অফিসে এসব যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। এমনকি প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত এসব যন্ত্র কোনোটিই ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেশিন ও যন্ত্রাংশ প্যাকেটজাত অবস্থায় পড়েছিল। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ থেকে এসব মেশিন কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তার কোনো নির্দেশনা ডাক বিভাগের প্রকল্প কর্তৃপক্ষ থেকে আঞ্চলিক অফিসকে প্রদান না করায় এসব যন্ত্র কোনো কাজে আসেনি। আসামিদের নামে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
Leave a Reply