1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
বিশ্বে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী-মসজিদের ইমাম একসঙ্গে পালিয়েছেন: দুদক চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে বড় জমায়েত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বদলে গেলো যমুনা নদীতে নবনির্মিত রেলসেতুর নাম আরাকান আর্মির সঙ্গে আমরা দর কষাকষি করতে পারি না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও বড় বাজেট যুক্তরাষ্ট্রে ‘শাটডাউন’ ঠেকাতে শেষমেশ বিল পাস করল প্রতিনিধি পরিষদ অটোরিকশার সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে: ডিএমপি কমিশনার উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই বিশ্বব্যাংক থেকে ১১৬ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ

সরকারের ১০০ দিন ব্যাংক ও আর্থিক খাতে যথেচ্ছ অনিয়মের সুযোগ বন্ধ, তবে সংকট কাটেনি

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৫ বার ভিউ

বিশেষ প্রতিবেদন :
ব্যাংক দখল করে মানুষের জমানো টাকা হাতিয়ে নেওয়া, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত করে কিংবা সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা বের করা, বাণিজ্যের ছদ্মবেশে অর্থ পাচার, ঋণখেলাপিদের নানা সুবিধা দেওয়া, টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক টিকিয়ে রাখা, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে ধস—ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর্থিক খাতে ছিল এই চিত্র। দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার আগে এই পচন থামাতে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে, যথেচ্ছ অনিয়মের সুযোগ বন্ধ করতে হয়েছে। এর ইতিবাচক ফলও এসেছে; কিন্তু সংকট পুরোপুরি কাটেনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ১০০ দিনে দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার–সংকটের আপাত সমাধান হলেও ব্যাংকিং খাতে যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে, তা দূর করা যায়নি। বেসরকারি ৫-৬টি ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা এখনো চাহিদামতো টাকা তুলতে পারছেন না। এই ব্যাংকগুলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি লুটপাটের শিকার হয়েছিল। এসব ব্যাংকে অনিয়ম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল হয়েছে। কিন্তু তাদের তারল্যসংকট দূর হয়নি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে বেশ কিছু ব্যাংককে ধার দিয়ে আসছিল। নতুন সরকার গঠনের পর টাকা ছাপিয়ে ধার দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তাদের টাকার জোগান দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যবস্থায় ব্যাংকগুলো চাহিদামতো টাকা ধার পাচ্ছে না। ফলে প্রয়োজন অনুসারে টাকা তুলতে না পারায় গ্রাহকের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সার্বিকভাবে, ব্যাংক খাতের ওপর গ্রাহকের আস্থা ফিরে আসেনি।

বেসরকারি ৫-৬টি ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা এখনো চাহিদামতো টাকা তুলতে পারছেন না। এই ব্যাংকগুলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি লুটপাটের শিকার হয়েছিল।

নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই আর্থিক খাত সংস্কারে বড় ধরনের উদ্যোগ নেয়। নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর কয়েক দিনের মধ্যেই ১১টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেন। কমিটি গঠিত হয় ব্যাংক খাত সংস্কার ও পাচার করা অর্থ উদ্ধারে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, একটি পরিষ্কার পথনকশা না থাকায় তড়িঘড়ি করে নেওয়া সংস্কার উদ্যোগ দুর্বল হয়ে পড়ছে। নীতি ও উদ্যোগের অভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যেও সংস্কারপ্রক্রিয়া টেকসই হওয়া নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়। লুটপাটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে, নাকি এগুলো একীভূত করা হবে, নাকি মালিকানা বদল বা মূলধন জোগান দিয়ে শক্তিশালী করা হবে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তরও কেউ দিতে পারছেন না।

ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের আর্থিক খাতে যে বিশাল সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার সামাল দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক খাতে অনেক ধরনের ঝামেলা আছে। এত সমস্যা একসঙ্গে সমাধান করার মতো সক্ষমতাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই।

নীতি পরিবর্তন করায় ডলারের সংকট অনেকটাই কেটেছে উল্লেখ করে মাহবুবুর রহমান বলেন, অনিয়মে জড়িয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ভাঙার পর নিরীক্ষা করে এসব ব্যাংকের প্রকৃত তথ্য বের করার পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চয়ই সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেবে, যা আমানতকারীদের জন্য ভালো হবে।

লুটপাটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে, নাকি এগুলো একীভূত করা হবে, নাকি মালিকানা বদল বা মূলধন জোগান দিয়ে শক্তিশালী করা হবে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তরও কেউ দিতে পারছেন না।

ডলার সংকট কেটেছে
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বে পণ্যমূল্য বাড়ে, ফলে দেশে ডলারের সংকট শুরু হয়। যুদ্ধ শুরুর আগে যে ডলারের দাম ছিল ৮৫ টাকা, খুব দ্রুত তা বেড়ে ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর প্রভাবে বাড়ে জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম। সময়োপযোগী নীতি না নিয়ে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ সরকার। তবে এই কৌশল সাফল্য আনেনি।

অন্তর্বর্তী সরকার গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৩ আগস্ট বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ করে। দায়িত্ব নিয়েই তিনি রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি ডলারের সরবরাহ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন। আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সীমা ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়। ফলে বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তী দাম হয় ১১৭ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত।

এসব পদক্ষেপ দ্রুত ফল দিতে শুরু করে। বাড়তে শুরু করে প্রবাসী আয়। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গেও সভা করেন গভর্নর। এর পর থেকে বিদেশি ব্যাংকগুলো তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকা বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর ডলার ব্যবহারের সীমা বাড়িয়ে দেয়। ফলে আমদানি ঋণপত্র খোলায় যে বাধা ছিল, তা অনেকটা কেটে যায়। এতে ডলারের সংকট কমেছে। রিজার্ভের পতনও থেমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী সরকারের সময় গত ৩১ জুলাই রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৯২ কোটি ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৮ কোটি ডলার। তিন বছর আগে মোট রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪১৬ কোটি ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী যা ১ হাজার ৮৪৩ কোটি ডলার। গত সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি দায়ের ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করার পর রিজার্ভ কিছুটা কমেছে।

ব্যাংক খাতে অনেক ধরনের ঝামেলা আছে। এত সমস্যা একসঙ্গে সমাধান করার মতো সক্ষমতাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান

বেড়েছে টাকার সংকট
নানা অনিয়মের তথ্য আলোচনায় আসার পর ২০২২ সালের শেষের দিকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের (এস আলম) মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে তারল্যসংকট দেখা দেয়। ফলে তাঁর নিয়ন্ত্রিত ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দিতে শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় ধার করা সেই টাকাও নামে-বেনামে ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যায় এস আলম গ্রুপ। এখন এসব ব্যাংকের কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।

তবে সরকার বদলের পর পর্ষদ বদল ও ধারের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় সংকটে পড়ে এই ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকের কিছু শাখায় ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের গ্যারান্টির (নিশ্চয়তা) বিপরীতে সবল ব্যাংকগুলো থেকে টাকা ধার দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করে। পাশাপাশি কোন ব্যাংক কত টাকা ধার দিতে পারবে, তার সীমাও নির্দিষ্ট করে দেয়। এর আওতায় সংকটে পড়া ৭ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা ধার পেয়েছে। এর মধ্যে দুটি ব্যাংকের (ইসলামী ব্যাংক ও আল-আরাফাহ্‌) নগদ টাকার সংকট কেটে গেলেও অন্যদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে একসময়ে ব্যাংকগুলো লুট করতে সহায়তা করেছিল। এখন তারল্য মেটাতে একটি জটিল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তাতে চাহিদামতো টাকা পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো, ফলে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। কারণ, একজন টাকা না পেলে অন্যদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ব্যাংক আস্থার ওপর টিকে থাকে উল্লেখ করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংকের যেসব আমানতকারী টাকা তুলে নিতে চান, তাঁদের কাউকে টাকা দিতে না পারলে অন্যরা টাকা তুলে ফেলতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই কারণে আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়ে গেছে।’

খেলাপি ঋণ ও সুদের হার
বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো খেলাপি ঋণ কমানো, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যা বাড়তে বাড়তে ২ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় (গত জুনের হিসাব)। ফলে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশই এখন খেলাপি। ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যখন নিরীক্ষা করবে, তখন প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও বেশি বলে সামনে আসতে পারে। পাশাপাশি সম্প্রতি ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি কমায় খেলাপি ঋণ বাড়তে পারে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদের (যে সুদে ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা দেয়) হার বাড়াচ্ছে। এতে ব্যাংকঋণের সুদের হারও বাড়ছে। ছাড়িয়েছে ১৫ শতাংশ। যদিও মূল্যস্ফীতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, বিগত তিন মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।

১১ নভেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে গভর্নর আহসান মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরও অন্তত আট মাস সময় তাঁদের দিতে হবে।

ঋণের সুদের হার বেড়ে যাওয়া ও অন্যান্য কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের গতি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে (৯ দশমিক ২০ শতাংশ)। ঋণপ্রবাহ কমলে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি কমে, যা মানুষের কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ব্যাংকের যেসব আমানতকারী টাকা তুলে নিতে চান, তাঁদের কাউকে টাকা দিতে না পারলে অন্যরা টাকা তুলে ফেলতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই কারণে আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়ে গেছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান
সংস্কার কত দূর
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্থনীতির যেসব খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে, ব্যাংক তাদের মধ্যে অন্যতম। এ জন্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সংস্কারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় ব্যাংক খাত।

ব্যাংক খাত সংস্কারে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনিয়মের শিকার ব্যাংকগুলোর সম্পদের প্রকৃত মান বের করবে এই টাস্কফোর্স। ইসলামী ব্যাংকসহ পাঁচটি ব্যাংকে ফরেনসিক নিরীক্ষা করা হবে, যা শুরু হচ্ছে আগামী মাসেই। ব্যাংক খাত সংস্কারের লক্ষ্যে একটি পৃথক আইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান বের করার পর এই আইনের অধীনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তসংস্থা টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দুবাই ও কানাডা থেকে পাচারের অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক আইনি অথবা অর্থ উদ্ধারে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

সার্বিক পরিস্থিতি ও সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়ে দুটি ব্যাংকের দুজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এই সময়ে গভর্নরকে একজন অর্থনীতিবিদের চেয়ে সংকট থেকে উত্তরণের ব্যবস্থাপক (ক্রাইসিস ম্যানেজার) হিসেবে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। এই যাত্রায় তাঁকে সহায়তা দেওয়ার মতো পাশে কেউ নেই। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেকেই আগের অনিয়মের সুবিধাভোগী ছিলেন, আবার কেউ কেউ গা এড়িয়ে চলতে চান। ফলে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সেগুলো কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com