বিশেষ প্রতিবেদন :
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে আরো দেওয়া হবে। আগামী রবিবার থেকে কোনো গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা না পেয়ে ফেরত যাবে না।’ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা না তোলার অনুরোধ জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমি বলেছিলাম টাকা ছাপাব না।
কিন্তু সেটা থেকে সাময়িকভাবে সরে এসেছি। বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সেই টাকা আবার তুলে নিয়ে আসব। কিন্তু মনিটরি পলিসি আগের মতো টাইট থাকছে। এখানে নেট মানি ক্রিয়েশন হচ্ছে না।
একদিকে সহায়তা করা হচ্ছে, অন্যদিকে বন্ডের মাধ্যমে তুলে নিচ্ছি। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এই সহায়তা দেওয়া হবে। আমাকে ডিপোজিটর ও মূল্যস্ফীতি দুটিই রক্ষা করতে হবে। টাকা ছাপাব না বলেছিলাম।
কিন্তু মানুষের অবস্থার কি পরিবর্তন হয় না?’
আগের সরকারও টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করেছিল, আবার এখনো দেওয়া হচ্ছে, এখন তাহলে তফাত কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে গর্ভনর বলেন, ‘ব্যাংক থেকে এখন আর টাকা চুরি হচ্ছে না। আগে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দেওয়ার পর টাকা বাইরে চলে গেছে। কিন্তু এখন জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে। আগে ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হলেও কোনো উন্নতি হয়নি দুর্বল ব্যাংকগুলোর। কিন্তু এখানে ফান্ডামেন্টাল পরিবর্তন হয়েছে।
ব্যাংকের বোর্ড চেঞ্জ হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে তদারকি করা হচ্ছে।’
এস আলমের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘উনি কী বলেছেন তা নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডিজিদের পদত্যাগ চেয়েছেন কেউ কেউ, এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ চাপ দিলে চাকরি ছেড়ে চলে যাব। আমি কোনো কিছু বরদাশত করব না।’
বিগত দিনে যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সামনের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে আমি নিজ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেব না। এখানে দলাদলি আছে। লাল, নীল দলের প্রতিনিধিত্ব না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হয়ে কাজ করেন।’
গভর্নর বলেন, ‘খেলাফি ঋণ কমিয়ে দেখানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই। হয়তো ভবিষ্যতে খেলাফি ঋণ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু কোনো তথ্য গোপন করা হবে না। এখনো সব চিত্র সামনে আসেনি। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আবার কাজ করছি। খেলাফি ঋণ যতই হোক না কেন আগে সঠিক তথ্য নিয়ে তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ব্যাংক খাত যা খারাপ হওয়ার তা আগেই হয়েছে। সঠিক অ্যাকাউন্টিংয়ের অভাব ছিল। সেটাকে আমরা সঠিক করার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ব্যাংকে শৃঙ্খলা আসবে না। অনেক আইন ছিল কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই। ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো আরো শক্তিশালী করার কাজ চলছে। আশা করি কাজ হবে।’
Leave a Reply