বিশেষ প্রতিবেদন :
ফেনীর সদর থানাধীন কালিদহ এলাকায় ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম হত্যা চেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় দুইজন পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ভিকটিম জহিরুল ইসলাম ফেনী থানাধীন কালিদহ বাজারের একজন ব্যবসায়ী। গত ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ফেনী জেলার ফেনী সদর থানাধীন কালিদহ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কালিদহ গ্রাম ও হাফিজিয়া গ্রামের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলছিল। খেলা চলাকালীন সময়ে ফাউলকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রামের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হাফিজিয়া গ্রামের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ কালিদহ গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে আনোয়ার হোসেন রনি এর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ফেনীর কালিদহ বাজারে কালিদহ গ্রামের সমর্থক শাকিল আহামেদ কে হত্যার উদ্দেশ্যে উৎপাত করলে ভিকটিম জহিরুল ইসলাম তার প্রতিবাদ করায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন রনি তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে ভিকটিম জহিরুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিম জহিরুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিম জহিরুল ইসলাম এর ভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় ১১ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৬৮/৫৪২, তারিখ- ৩০ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৫০৬(২) দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। নজরদারির একপর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, সূত্রে বর্ণিত মামলার ২নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি বেলায়েত হোসেন রিয়াজ ফেনী জেলার ফেনী পৌরসভাস্থ এসএসকে রোড এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ১৮৫৫ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি বেলায়েত হোসেন রিয়াজ (২৬), পিতা- আব্দুস সবুর মিয়া, সাং- টঙ্গিরপাড়, থানা-ফেনী সদর, জেলা- ফেনী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামি বেলায়েত হোসেন রিয়াজ এর দেওয়া তথ্যমতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের অপর একটি আভিযানিক দল আনুমানিক ১৯৪০ ঘটিকায় ফেনী জেলার ফেনী পৌরসভাস্থ সালাউদ্দিন মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি উক্ত মামলার ০৪ নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মোঃ ইব্রাহিম প্রকাশ রিয়েল (২২), পিতা- একরামুল হক, সাং- টঙ্গিরপাড়, থানা-ফেনী সদর, জেলা- ফেনী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে এবং গত ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ফেনীর সদর থানাধীন কালিদহ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে তারা ফেনী জেলার বিভিন্ন অবস্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাদের ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply