বিশেষ প্রতিবেদন :
শুমারির প্রস্তুতি হিসেবে ১ কোটি ২২ লাখ ৩১ হাজার ১৩টি শিল্প ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ লাখ ২২ হাজার ৬৭টি প্রতিষ্ঠান এবং ৫৬ লাখ ৮ হাজার ৪৪৬টি কৃষি অর্থনীতির খানা।
ই-কমার্স, বিদেশি কর্মীসহ বেশকিছু নতুন সূচক যুক্ত করে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পক্ষকালব্যাপী চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি।
সোমবার আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১০-২৬ ডিসেম্বর দেশব্যাপী এই শুমারি করা হবে। এবার সম্পূর্ণ ডিজিটাল এবং অনলাইন পদ্ধতিতে কাজটি করা হবে।
জরিপ কাজের জন্য ইতোমধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাব প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ট্যাব নিয়মিত ব্যবহার করা হবে।
সারা দেশকে ১৩টি শুমারি বিভাগে ভাগ করে এর মধ্যে ১৩০টি শুমারি জেলা, ৫২০টি শুমারি উপজেলা, দুই হাজার ৬০০ জোন, ১৯ হাজার সুপারভাইজার এলাকা এবং ৯৫ হাজার গণনাকারী এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুমারির প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে সারাদেশে ১ কোটি ২২ লাখ ৩১ হাজার ১৩টি শিল্প ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ লাখ ২২ হাজার ৬৭টি প্রতিষ্ঠান এবং ৫৬ লাখ ৮ হাজার ৪৪৬টি কৃষি অর্থনীতির খানা।
তিন বছরব্যাপী এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল মূল জরিপ বাবদ খরচ হবে ২৩৪ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার বলেন, “এবারের জরিপের নতুনত্ব হচ্ছে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া ডিজিটাল বিজনেস বা ই-কমার্স হিসেবে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলোর তথ্য উঠে আসবে।
“এবার দেশের সব অর্থনৈতিক ইউনিট কভার করা হবে। ৭০টি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলো উঠে আসবে, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হবে, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আইসিটির কতটা সংযুক্তি হলো সেটা খতিয়ে দেখা হবে। প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়, মুনাফা দেখা হবে।”
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শুমারি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে জিআইএস বা জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সিস্টেম ও জিও কোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে।
“মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবগুলো মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে জনশুমারি, কৃষি শুমারি ও অর্থনৈতিক শুমারি করে।
দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে হয়। তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থনৈতিক শুমারির মূল লক্ষ্য হলো সময়ের বিবর্তনে একটি দেশের অর্থনীতিতে যে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটে, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা। প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুত করা; শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মৌলিক তথ্য সরবরাহ করা; অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনবলের হিসাব নিরূপণের পাশাপাশি তাদের ধরন সম্পর্কে ধারণা লাভ করা; শিল্প বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান মৌলিক সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা; বিনিয়োগকৃত মূলধন ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাসকরণ এবং তাদের সংখ্যা নির্ধারণ এবং শিল্পোন্নয়নের জন্য দেশের নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষকসহ বিভিন্ন অংশীজনদের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা।
Leave a Reply