1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:

চট্টগ্রাম বন্দরের এই টার্মিনাল পরিচালনার মডেলটির নাম ‘ল্যান্ডলর্ড’

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫ বার ভিউ

বিশেষ প্রতিবেদন :
কর্ণফুলীর তীরে শামিয়ানা টানিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল সেদিন। বক্তা ছিলেন মাত্র দুজন। খুব দ্রুত বক্তব্য শেষ হয়। এরপরই সবার নজর অনুষ্ঠানস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে জেটিতে নোঙর করে রাখা ‘মায়ের্সক দাভাও’ জাহাজের দিকে। ক্রেন দিয়ে জাহাজে তোলা হলো নিচে রাখা একটি কনটেইনার। সবকিছুই যেন আধঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে গেল।

অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল না হাততালি কিংবা সাজ সাজ রব। অথচ ছোট্ট আয়োজনটি ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালনার ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার ঘটনা। কারণ, বাংলাদেশে কনটেইনার পরিবহনের ৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার বিদেশি প্রতিষ্ঠান বন্দর পরিচালনায় যুক্ত হয়েছে।

দিনটি ছিল এ বছরের ১০ জুন, সোমবার। ঘটনাস্থল ছিল নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল। বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি হলো সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটি)। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় জিটুজি ভিত্তিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি ২২ বছর মেয়াদে টার্মিনালটি পরিচালনা করবে, যেটার চুক্তি হয়েছিল ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর।

চট্টগ্রাম বন্দরের এই টার্মিনাল পরিচালনার মডেলটির নাম ‘ল্যান্ডলর্ড’। সহজ কথায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বন্দর পরিচালনা। বন্দর টার্মিনালের জেটি করে দিয়েছে। আর টার্মিনালটিতে যন্ত্রপাতি খাতে বিনিয়োগ করে পরিচালনা করবে সৌদি প্রতিষ্ঠানটি। কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য শিপিং কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফিও আদায় করবে তারা। বিনিময়ে এককালীন ও বার্ষিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বন্দরকে দেবে তারা। এ ছাড়া চুক্তি অনুযায়ী ১৮ ডলার পাবে বন্দর।

বন্দরের পুরোনো টার্মিনালগুলো এখনো পরিচালনা হয়ে আসছে ‘টুলপোর্ট’ মডেলে। এই মডেলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সব বিনিয়োগ করে এবং সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করছে। সব ধরনের মাশুলও আদায় করছে বন্দর। শুধু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজের বিনিময়ে দরপত্র অনুযায়ী নির্দিষ্ট অর্থ দেওয়া হয়।

এ বছর বন্দর ল্যান্ডলর্ড মডেলে পদার্পণ করলেও আলোচনা শুরু হয়েছিল নব্বই দশকের শেষে। সে সময় বিশ্বজুড়ে বন্দর পরিচালনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হওয়ার ঢেউ শুরু হয়। এই প্রভাব পড়ে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও। বিদেশি বিনিয়োগ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে বন্দর সেবা বাড়ানোর বিষয় ল্যান্ডলর্ড মডেলকে জনপ্রিয় করে তোলে বিশ্বজুড়ে। ১৯৯৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানে একটি করে টার্মিনাল ল্যান্ডলর্ড মডেলে বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। একই বছর অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর অখ্যাত বিদেশি প্রতিষ্ঠান এসএসএ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মোহনায় বেসরকারি বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে মালিকানাসহ নানা জটিলতা এবং আন্দোলনের মুখে তা বাতিল হয়। তবে স্বচ্ছভাবে ল্যান্ডলর্ড মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয় এ শতকের প্রথম দশকে। সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর ২০০৮ সালে নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চার অপারেটর দরপত্রে অংশ নিয়েছিল। তবে তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা বাতিল করে বন্দর। প্রায় ২৬ বছরের মাথায় এবার আবার আলোর মুখ দেখল ল্যান্ডলর্ড মডেল।

এ বছরের আগে বন্দর পরিচালনায় শতভাগ টুল পোর্ট মডেল হিসেবে নাম ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের। ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘পোর্ট রিফর্ম টুলকিট’ শীর্ষক প্রকাশনায়ও টুল পোর্ট মডেলের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে রেখেছিল চট্টগ্রাম বন্দরের নাম। এখনো বন্দরের তিনটি পুরোনো টার্মিনাল টুলপোর্ট মডেলে পরিচালনা হচ্ছে। সেখানেও একটি টার্মিনাল ল্যান্ডলর্ড মডেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সামনে বে টার্মিনাল, লালদিয়ার টার্মিনালও পরিচালনা হবে ল্যান্ডলর্ড মডেলে। তাতে শতভাগ টুলপোর্ট মডেলের বন্দর পরিচালনার উদাহরণ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের নামও সামনে থাকবে না। দেরিতে হলেও ল্যান্ডলর্ড মডেলে পদার্পণের নতুন ইতিহাস লেখা হবে। বছর হিসেবে লেখা থাকবে ২০২৪ সাল।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com