সরেজমিন প্রতিবেদন:
ফেনীর পরশুরামে রাতের আধারে মুহুরি, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের চরের মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। পরশুরাম উত্তর বাজারের পৌর এলাকার খোন্দকিয়া বেড়িবাঁধের চরের বিস্তীর্ণ এলাকার মাটি প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট কেটে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রাত ১২টার পর থেকে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা শুরু হয়। ১০-১২টি পিকআপ গাড়ি দিয়ে এসব মাটি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া চড়া দামে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে জমি ভরাট করে নতুন বাড়ি বানানোর উদ্যোক্তাদের কাছে।
গত রোববার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাটি কাটার স্কেভেটর দিয়ে চরের বিশাল অংশ কেটে নিয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ সংলগ্ন স্থানের বাসিন্দা রাবেয়া আক্তার ও তার ছেলে সৌরভ বলেন, ‘মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন রাতে মাটি কেটে নিয়ে যায়। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন আসার খবর শুনলে কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখে। পরে আবার মাটি কাটা শুরু করে।’
জানা যায়, ছাগলনাইয়ার আবুল কালাম, মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলী গ্রামের আবদুল মুনাফ ও বিলোনিয়ার হাবিবুর রহমান প্রতিদিন রাতে স্কেভেটর দিয়ে বেড়িবাঁধের মাটি কেটে বিক্রি করছেন। পরশুরাম উত্তর বাজারের খোন্দকিয়া দাস পাড়ার সামনে, নিজকালিকাপুর ও নোয়াবাজার ব্রিজ সংলগ্ন বেড়িবাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন তারা। প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে শুরু করে ভোর ৬টা পর্যন্ত বেড়িবাঁধে মাটি কাটার মহোৎসব চলে। অভিযোগ আছে, থানা পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে শত শত একর ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
মুহুরি নদীর বেড়িবাঁধের মাটি কাটার অভিযোগের বিষয় জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি অস্বীকার করে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘মুহুরি নদীর বেড়িবাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কাউতলী গ্রামের আবদুল মুনাফ। সে ওই নদীর দুপাশের মাটি কেটে নিয়ে গেছে।’ ওই স্থান থেকে মাটি কাটেননি বলে জানান তিনি।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ‘মুহুরি নদীর বেড়িবাঁধের মাটি কাটার অভিযোগ পেয়ে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে তারা কেউ এখনো ধরা পড়েনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসায় পৌর কাউন্সিলরসহ তিনটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি সভা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’ বেড়িবাঁধের চরের মাটি ও কৃষি জমির টপ সয়েল মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
Leave a Reply