সরেজমিন প্রতিবেদন :
৫ আগস্ট জনগণ তাদের শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সতর্ক না হলে হায়-হাপিত্যেশ করে পস্তাতে হবে। অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সাবধান করে তিনি বললেন, জনগণের পাশে না থাকলে মানুষ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, নিজের এলাকায় গাড়িবহরের সামনে কিছু মানুষকে দেখে অবাক হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গতবছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এমন মানুষ ভিড় করা শুরু করেছেন।
গত ১৭ বছরের আওয়ামী লীগের নির্যাতন-অত্যাচার, ত্যাগ ভুলে না গিয়ে প্রত্যেকের নিজেদের মধ্যে জিজ্ঞাসা আসা উচিৎ অপরিচিত মানুষগুলোকে কেন বিএনপির কাছে আসতে দিব? সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সচেতন থাকতে হবে, যেন অনুপ্রেবেশকারীরা ঢুকতে না পারেন। মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।
ভোটই একমাত্র জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু সবার এক জায়গায় থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পরপর আইন ও সংবিধান মেনে ভোট হতে হবে, নির্বাচন দিতে হবে।’
বিএনপির নেতাকর্মীরা কাউকে সুবিধা দেয়ার জন্য ১৭ বছর নির্যাতন সহ্য করেনি বলে উল্লেখ করেন তারেক। নেতাকর্মীদের বিনীত ও করজোড়ে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন,
‘মোটরসাইকেলওয়ালা অনুপ্রবেশকারীদের দলে ভেড়াবেন না। ভিড় করতে দিবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না, কোনো বিভ্রান্তিমূলক কাজ করবেন না। তাদের দলে ভেড়ালে দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য ভালো হবে না। অন্য কেউ যদি সরকার গঠন করে, তাহলে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনযোগ থাকা উচিৎ, সেটা দলের জন্য ভালো হবে না। মানুষের পাশে দাঁড়ান, তাদের মতো করে নিজেদের তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ যখন ক্ষিপ্ত হয় তখন স্বৈরাচারদের পালাতে বাধ্য করে। ৫ তারিখ তার উদাহরণ। তাই জনগণের সমর্থন নেয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। দিনশেষে জনগণের কাছে ফিরতেই হবে। জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিলে কিছুই করার থাকবে না।’
তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন,
কিছু ছোট-বড় রাজনৈতিক দল ও শক্তি বিএনপির বিপক্ষে কাজ করছে, কথা বলার চেষ্টা করছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সামনের নির্বাচন সহজ হবে না। জনগণই বিএনপির শক্তি, এই জনগণই ৫ তারিখে দেখিয়ে দিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন। তাই জনগণ যদি দেখিয়ে দেয় তখন পস্তাতে হবে, হায়-হাপিত্যেশ করতে হবে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদেরই নেতার (বঙ্গবন্ধু) নাম ছবি, মূর্তি দেশের মানুষ নামিয়ে ফেলেছে। জিয়াউর রহমানের নাম বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে আছে, মোছা যাবে না।
এ সময় সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে দু’বছর আগেই বিএনপি ৩১ দফা দিয়েছে। তাই খোড়া যুক্তি চলবে না, যে সংস্কার আগে তারপর নির্বাচন। নির্বাচিত শক্তি ছাড়া সংস্কার বৈধতা পায় না, শক্তি পায় না।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করতে রাজনৈতিক সরকার অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। আবারও দুর্নীতি শুরু হয়ে গেছে, প্রশাসনে যে আমলারা আছে, তারা আবার আগের কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেদিকে নজর দিন। যত দ্রুত নির্বাচন হবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা ততই সম্ভব হবে।
Leave a Reply