বিশেষ সংবাদ :
ফেনীর পরশুরামে শিশু উম্মে সালমা লামিয়া (৭) হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মা আয়েশা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে।
নিহত শিশু লামিয়ার বাবা মো. নুরুন্নবী বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে পরশুরাম থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা আয়েশা বেগম ও লামিয়ার সৎ মা রেহানা আক্তারকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার আয়েশা বেগমকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আর মৎ মা রেহানা আক্তারকে বাদীর জিম্মায় দেওয়া হয় বলে জানান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পরশুরাম সার্কেল) মো. ওয়ালী উল্লাহ।
মো. ওয়ালী উল্লাহ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুন্নবীর সাবেক স্ত্রী আয়েশার পরিকল্পনায় এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তবে এখনও তিনি মুখ খুলছেন না। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে হয়তো হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই যুবকের পরিচয় শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে রয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন দুই যুবক এক মোটরসাইকেলে লামিয়াদের ঘরে ঢুকে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ঘটনার সময় নিহত লামিয়ার বড় বোন ১২ বছর বয়সী ফাতেমা আক্তার নিহার দেয়া তথ্যও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
নিহা পুলিশকে বলেছে, ওই দুই যুবক তার মায়ের পূর্ব পরিচিত এবং তাদের নাম না জানলেও দেখলে সে চিনবে।
লামিয়ার বাবা মো. নুরুন্নবী জানান, তার বর্তমান স্ত্রী রেহানা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ তার জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগের স্ত্রী আয়েশার সঙ্গে অনেক দিন ধরে বিরোধ চলছিল তার। আয়েশার পরিকল্পনাতেই তাকে ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ফাঁসাতে লামিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার।
এদিকে বুধবার দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে লামিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পরশুরামের বাঁশপদুয়া গ্রামে দাফন করা হয়।
এর আগে বাঁশপদুয়া গ্রামে গত মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে হেলমেট পরা দুই যুবক মো. নুরুন্নবীর ভাড়া বাসায় গিয়ে নিজেদের বিদ্যুতের কর্মী পরিচয়ে দরজা খুলতে বলেন। এসময় তার দুই শিশুসন্তান দরজা খুলে দিলে দুই যুবক ঘরে ঢুকে শিশু লামিয়াকে স্কচটেপ দিয়ে হাত-মুখ-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
লামিয়ার বড় বোন নিহা একজনের হাত কামড়ে দিয়ে পাশের কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। লামিয়াকে হত্যার পর দুই যুবক চলে গেলে নিহা দৌড়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
পরে নিহা অজ্ঞান হয়ে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। ঘটনার সময় লামিয়ার বাবা নুরুন্নবী ও সৎ মা রেহানা আক্তার বাড়িতে ছিলেন না।
Leave a Reply