বিশেষ প্রতিবেদন
দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে আজ (৩০-০১-২০২৫ খ্রি.) ৩টি অভিযোগের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান ০১:
সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে শুল্ক কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশে পণ্য লোড-আনলোড সেবা না প্রদান না করেই ঠিকাদার কর্তৃক বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, শ্রমিক, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয় এবং নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়:
• মেসার্স হোসনে আরা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লেবার সরবরাহ না করেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেআইনিভাবে ১০,৮৭,০৬,৪৬৯ টাকা লেবার খরচ বাবদ উত্তোলন করেছে।
• আমদানিকারকগণ নিজেদের শ্রমিক দিয়ে পাথর লোড-আনলোড সম্পন্ন করেছেন।
• এলসি অনুমোদিত প্রতি ট্রাকে ৫ টন পাথর থাকার কথা থাকলেও ১০-১২ টন করে আমদানি করা হয়, কিন্তু অতিরিক্ত ৬ টনের শুল্ক (প্রতি ট্রাকে ৩,৩৬০ টাকা) পরিশোধ করা হয়নি।
• প্রতিদিন ৪৫০টি ট্রাকে আনুমানিক ১৫,১২,০০০/- টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, যার বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ৩৩২.৬৪ কোটি টাকা।
সার্বিক বিবেচনায়, শুল্ক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সরকার উক্ত বন্দরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মর্মে টিমের নিকট অভিযানকালে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযান চলাকালীন সংগৃহীত রেকর্ড ও তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অভিযান ০২:
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কম্বল ও অন্যান্য আসবাবপত্র কেনাকাটায় অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় টিম হাসপাতালের স্টোর রুম পরিদর্শন করে, যেখানে নিম্নমানের কম্বল ও ম্যাট্রেস পাওয়া যায়। বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উক্ত হাসপাতালে অনুমোদিত ডায়েট চার্ট অনুযায়ী মানসম্মত ও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে না। এছাড়াও অভিযানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যাবলি বিশ্লেষণপূর্বক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।
অভিযান ০৩:
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশে বন্ড সুবিধার আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচারসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভুয়া ইনভয়েসিং ও আমদানি-রপ্তানি বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সংক্রান্তে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে কাস্টম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জব্দকৃত দুটি কন্টেইনার ভর্তি বিদেশি সিগারেট সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র এবং ২০২৩ সালের মার্চে গাজীপুরের একটি প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত পরিমাণ (৮০,০০০ টন সোডিয়াম সালফেট এনহাইড্রোস ও ৫০,০০০ টন সোডা অ্যাশ লাইট পাউডার) আমদানির রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
Leave a Reply