বিশেষ সংবাদ:
পাকিস্তানে নির্বাচনের ২৩৮ আসনের ফল ঘোষণা, এগিয়ে ইমরানের সমর্থকেরা
ফল ঘোষণা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছে।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ২৩৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণার কথা জানা গেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আসনেই এগিয়ে রয়েছেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকেরা।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা’র খবরে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ঘোষিত ২৩৮টি আসনের মধ্যে ৯৭টিতেই জয় পেয়েছে স্বতন্ত্ররা, যাদের বেশিরভাগই ইমরান খানের সমর্থক।
নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) পিএমএল-এন ৬৬টি আসনে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫১টি আসনে জয় পেয়েছে।
এছাড়া, অন্যান্যরা ২৪টি আসনে জয় পেয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর ফল ঘোষণা শুরু হয়। দীর্ঘ এই সময় ধরে ফল আটকে রাখায় বা স্পষ্ট করে কিছু না বলায় প্রশ্ন উঠেছিল। নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, পাকিস্তানের অতীতের নির্বাচনগুলোকে বিবেচনায় নিলে এবারের ফল ঘোষণায় এমন বিলম্ব অস্বাভাবিক।
ফল ঘোষণা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছে। ধারণা করা হয়েছিল, মূল লড়াইটি শেষ পর্যন্ত ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী এবং নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এনের প্রার্থীদের মধ্যে হবে। তবে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।
পিটিআই গত জাতীয় নির্বাচনে জিতে পাকিস্তানে সরকার গঠন করেছিল। অন্যদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার পিএমএল-এনের পেছনে ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর সমর্থন রয়েছে।
সংসদে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১৩৩টি আসন প্রয়োজন। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে কোনো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-ও পেতে পারে।
এদিকে নির্বাচনে জয় পাবে বলে দাবি করেছে প্রধান দুই দলই—পিটিআই ও পিএমএল-এন।
লাহোরে ভোট দেওয়ার সময় নওয়াজ শরিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘জোটগত সরকারের কথা বলবেন না।’
এদিকে পিএমএল-এনের নেতা মরিয়ম আওরঙ্গজেব দাবি করেছেন, কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে পিএমএল-এনই সরকার গঠন করবে।
এক এক্স বার্তায় (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, তাদের দলের ইলেকশন সেল এখনও ফল সংগ্রহ করছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ফল সংগ্রহ কঠিন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার দল ‘শক্তিশালী’ অবস্থানে আছে।
অন্যদিকে পিটিআইও পিএমএল-এনের প্রতি পরাজ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এক এক্স বার্তায় দলটি বলেছে, ‘পরাজয় মেনে নিন। পাকিস্তানের জনগণ কখনও আপনাকে গ্রহণ করবে না।’
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে পিটিআইকে দল হিসেবে বৃহস্পতিবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণের সময় পাকিস্তানজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক। এছাড়া অনেক অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা কিংবা গতি কম থাকার খবরও এসেছিল।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, ডন, ও আল জাজিরা
Leave a Reply