সরেজমিন প্রতিবেদন :
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে আজ (০৪-০২-২০২৪ খ্রি.) ৩টি অভিযোগের বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান ০১:
Center for Research and Information (CRI) নামক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক বিভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে আজ দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা যায় যে, CRI নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসাবে সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে সায়মা ওয়াজেদ, ট্রাস্টি হিসাবে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং নসরুল হামিদের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে অভিযানকালে সরেজমিনে CRI -এর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কার্যালয়টি বন্ধ পায় এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানকালে, CRI নামক প্রতিষ্ঠানের যে সকল ব্যাংকে হিসাব চালু ছিল ওই সকল ব্যাংক (ডাচ বাংলা, আইএফআইসি, সোনালী ব্যাংক) হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আই এফ আই সি ব্যাংকে CRI নামক প্রতিষ্ঠানটির নামীয় একটি ৩৫ কোটি ২১ লক্ষ টাকার এফডিআর রয়েছে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকে লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। অভিযানকালে সংগৃহীত নথিপত্র এবং ব্যাংক হিসাবসমূহের লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তীতে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযান ০২:
নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, গোপালগঞ্জ কর্তৃক বাস্তবায়িত গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতাধীন ২টি কাজে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা কার্যালয়, গোপালগঞ্জ হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য নিম্নরূপ:
অভিযোগ-১:
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবারা (মোল্লারহাট ব্রিজের নিকট) মোল্লারহাট পুরাতন ফেরী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ১৫৯০ মিটার সড়ক বিটুমিন কার্পেটিং দ্বারা উন্নতিকরণ বাবদ ১,১৪,৪৫,০০০/- টাকা ও একই সড়কে ২*৪.০০*৪.০০ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ বাবদ ২৪,১৯,১০৫/- টাকার কাজ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গোপালগঞ্জ কর্তৃক গৃহীত হয়। অভিযানকালে দেখা যায় গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চর গোবরা, মোল্লারহাট পুরাতন ফেরী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়নি। অথচ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গোপালগঞ্জ কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী উক্ত কালভার্টটি প্রকৃত স্থান থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দুরে দত্তডাঙ্গা নামক স্থানে ম্যাকভিশন এগ্রো লি: এর চেয়ারম্যান জনাব মাহাবুব আলী খান, কাজুলিয়া, গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ (জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি) এর ফিড মিলের প্রবেশ মুখে নির্মাণ করা হলেও টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়, উক্ত ফিড মিলের আশেপাশে কোন জনবসতি নাই। শুধুমাত্র উক্ত ফিড মিলে প্রবেশের জন্য রাষ্ট্রীয় ২৪,১৯,১০৫/- টাকা অপচয় করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলজিইডি গোপালগঞ্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উক্ত ফিড মিলের প্রবেশ মুখে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করেছেন মর্মে অভিযানকালে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
অভিযোগ-২:
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাধীন ডুমরাসুর জতিন সাধুর বাড়ী – সুশীল বৌল ভায়া জিপিএস সড়ক (চেইঃ ১০৪০-১৭৬০মিঃ) উন্নয়ন সংক্রান্ত ৭২০ মিটার রাস্তা নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনায় টিম জানতে পারে, বর্ণিত ৭২০ মিটার রাস্তার মধ্যে আনুমানিক ৪০০ মিটার রাস্তা ব্যক্তিমালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত। উক্ত ৪০০ মিটার রাস্তার আশেপাশে সাধারণজনগণের কোন বসতি না থাকলেও পার্ক কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্কের অভ্যন্তরে সরকারিভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। উক্ত ৭২০ মিটার সড়কের মধ্যে পার্কের অভ্যন্তরে অবস্থিত ৪০০ মিটার রাস্তার জন্য ব্যয়কৃত প্রায় ৪২,০৪,৭৩২/- টাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, গোপালগঞ্জ -এর উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীগণ প্রাক্কলন প্রস্তুত, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বিল পরিশোধের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অপচয় করেছেন মর্মে অভিযানকালে টিমের নিকট প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
সকল নথিপত্র বিশ্লেষণপূর্বক অভিযোগ ২টির বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর উপস্থাপন করবে টিম।
অভিযান ০৩:
ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ -এ সরকারি ইউনানী ঔষধসহ বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাত সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে উক্ত হাসপাতালের ২০২১-২২ হতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট-বরাদ্দ, দরপত্র, কোটেশন, কার্যাদেশ, ওষুধ গ্রহণের চালান, ওষুধ স্টক রেজিস্টার, বিতরণ রেজিস্টার, রোগীকে ওষুধ প্রদানের শর্ট স্লিপ ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করা হয়। এছাড়াও বাজেট বরাদ্দ, ব্যয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, ওষুধ ও অন্যান্য ক্রয় সংক্রান্ত রেজিস্টার এবং ওষুধ ও অন্যান্য বিতরণ সংক্রান্ত রেজিস্টার পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
Leave a Reply