বিশেষ প্রতিবেদন :
চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর বোনের শ্বশুড় বাড়ীতে প্রবাসী ভাই মোঃ মফিজ প্রকাশ মহিউদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ শেখ ফরিদ প্রকাশ শরীফ’কে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
নিহত ভিকটিম মোঃ মফিজ প্রকাশ মহিউদ্দিন (৪৫) দীর্ঘ দিন যাবত ওমান প্রবাসী ছিলেন এবং কিছু দিন পূর্বে দেশে ফিরে আসেন। অনুমান ০৪ বছর পূর্বে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পার্শ্বর্বতী এলাকার জৈনক শেখ ফরিদ এর সাথে ভিকটিমের বোনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর হতে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিন্ডার সৃষ্টি হয়। নিহত ভিকটিম মোঃ মফিজ প্রকাশ মহিউদ্দিন বোনের সংসারে সুখের কথা চিন্তা করে প্রবাসে অবস্থান কালে বোন জামাই শেখ ফরিদ উদ্দিন’কে ব্যবসার জন্য ১৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরর্বতীতে ভিকটিম মহিউদ্দিন দেশে অবস্থান কালে তার বোনের কাছে প্রদানকৃত ১৫ লাখ টাকা ফেরত চান। উক্ত বিষয়ে ভিকটিমের বোন তার স্বামী শেখ ফরিদ উদ্দিন’কে টাকা ফেরত প্রদানে বিষয়ে অবহিত করলে শেখ ফরিদ উদ্দিন এবং তার পরিবার টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। ভিকটিমের বোন টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকৃতির কথা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার ভাইকে অবহিত করলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে আনুমানিক রাত ২১৩০ ঘটিকায় নিহত ভিকটিম তার বোনর শ্বশুড় বাড়ী চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন নোয়াপাড়া এলাকায় হাজির হয়ে তার প্রদানকৃত ১৫ লাখ টাকা ফেরত প্রধানে অস্বীকৃতির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করিলে বোন জামাই শেখ ফরিদ এবং তার পরিবারে অন্যান্য লোকজনের সাথে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। বকাবিতন্ডার এক পর্যায়ে বোন জামাই শেখ ফরিদ এবং তার পরিবারে অন্যান্য লোকজন উত্তোজিত হয়ে প্রবাসী মহিউদ্দিন’কে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরত্বর রক্তাক্ত জখম করে। পরর্বতীতে স্থানীয় লোক জন এবং ভিকটিমের বোন ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার জোরাগঞ্জ থানায় ৪ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতানাম ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি মামলার দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩, তারিখ-২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ধারা-৩২৩/ ৩২৫/৩০৭/৩০২/৩৪/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় অসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। গোয়েন্দা নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় অন্যতম প্রধান আসামী ঘাতক বোন জামাই শেখ ফরিদ চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন উত্তর কাট্টলী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে আনুমানিক ১৬২০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী শেখ ফরিদ প্রকাশ শরিফ (৩৫), পিতা-মিছিল আহমেদ, সাং-নোয়াপাড়া, থানা-জোরারগঞ্জ ,জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করত সূত্রে বর্নিত মামলার ০১নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে এছাড়াও সে মামলা রুজু হওয়ার পর হতে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply