বিশেষ প্রতিবেদন :
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতের পর লেবাননের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য ১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। শুক্রবার (৭ মার্চ) প্রকাশিত ‘লেবানন র্যাপিড ড্যামেজ অ্যান্ড নিডস অ্যাসেসমেন্ট (আরডিএনএ) ২০২৫’ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ১১ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার সরকারি খাতে ব্যয় করতে হবে। এর মধ্যে অবকাঠামো খাতে (বিদ্যুৎ, সরকারি ও পৌরসেবা, পরিবহন, পানি, পয়োনিষ্কাশন ও সেচব্যবস্থা) প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় প্রয়োজন।
অপরদিকে, বেসরকারি খাতে ৬ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে, যা মূলত আবাসন, ব্যবসা, উৎপাদন ও পর্যটন খাতের পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সংঘাতের ফলে লেবাননের মোট অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৬.৮ বিলিয়ন ডলার অবকাঠামোগত ক্ষতি এবং ৭.২ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব ক্ষতি, উৎপাদনশীলতা হ্রাস ও পরিচালন ব্যয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আবাসন খাত, যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ৪.৬ বিলিয়ন ডলার।’
এছাড়া, বাণিজ্য, শিল্প ও পর্যটন খাতেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, যা প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
লেবাননের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০২৪ সালে ৭.১ শতাংশ কমেছে, যেখানে সংঘাতের আগে এটি ০.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৯ সাল থেকে লেবাননের সামগ্রিক জিডিপি হ্রাস প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বহুমুখী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবকে আরও গভীর করেছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করেছে।’
ইসরাইল ও লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মধ্যে কয়েক মাস ধরে সীমান্ত সংঘর্ষ চলার পর সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ণমাত্রার লড়াইয়ে রূপ নেয়। তবে ২৭ নভেম্বর থেকে দেশটিতে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
লেবানন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের প্রায় ১,১০০টি ঘটনা ঘটিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এসব ঘটনায় অন্তত ৮৪ জন নিহত এবং ২৮০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
Leave a Reply